মার্চ মাস মানেই দোল বা হোলির মাস। বসন্তের রঙে ফাগুনী হাওয়ার উল্লাস। উদযাপনে মেলে আবির । উত্তরপ্রদেশে এহেন রঙিন দোলের সঙ্গে আবার রয়েছে লাঠির একরকম গূঢ় সম্পর্ক। আজ্ঞে হ্যাঁ, ঠিকই পড়েছেন, লাঠি। এই উৎসবের নাম লাঠিমার উৎসব। মথুরায় প্রতিবছর দোলের ঠিক সাতদিন আগেই হয় এই খেলায় । ঠিক কি হয় চলুন জেনে নিই।
স্থানীয় নন্দগাঁও এলাকারপুরুষরা মাথায় বেঁধে নেয় পট্টি বা পাগড়ি। তাদের হাতে থাকে মাটির ঢাল। আবার বরসনার মহিলারা সুসজ্জিত হয়ে হাতে তুলে নেয় শক্ত লাঠি। লাঠি নিয়ে চলে পুরুষদের উপর ছলনাপূর্ণ আঘাত। দুদলে ভাগ হয়ে চলতে থাকে এই খেলা। খেলায় যদি কোন পুরুষের ঢাল যায় ভেঙে তাকে সাজতে হয় নারী। কোন একদল হেরে গেলেই খেলা শেষ হয়। উত্তরপ্রদেশের বরসনায় প্রধানতঃ এই উৎসবের আয়োজন হয়। শহরের একদিকে চলে আবীর পরিক্রমা আর একদিকে এই লাঠমার উৎসব। দেশ বিদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ এখানে এসে মেলেন । পুরনো গল্প শুনলে দেখা যায় মূলতঃ নন্দগাঁও এলাকার বাসিন্দা কৃষ্ণ ও তাঁর সঙ্গীরা দুষ্টুমি করে নারী সেজে রাধা ও তার বন্ধুদের সাথে মজা করতে যায়। ধরা পড়লে পর, তাদের লাঠি দিয়ে কপটাঘাত করে বরসনার বাসিন্দা রাধা ও তার সঙ্গীনীরা। তারা তাদের মারতে মারতে বরসনা থেকে বের করে দেয়। সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই শুরু এই খেলার। এ বছর ২৮ মার্চ হোলি, তাই ২৩ মার্চ এই খেলায় ইতিমধ্যেই রঙিন হয়ে উঠেছে মথুরা। তীব্র ভিড়ে আর রঙে সে যেন এক অন্য মথুরা।
বহু বছর ধরে চলে আসা এই রীতির মাধুর্য ভীষণ রঙীন। নন্দগাঁও থেকে বরসনা, এই পুরো এলাকা জুড়ে রঙিন হোলিতে মেতে ওঠে বাচ্চা থেকে বৃদ্ধ। “রাধে রাধে” নামে মুখর হয়ে ওঠে বাতাস। অগ্রিম এই আবিরের গন্ধে মনে লেগে ওঠে বাসন্তী রঙ।
Discussion about this post