সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম খুললেই আজকাল চোখে পড়বে দারুণ দারুণ সব পোশাকের ছবি। শাড়ি, ব্লাউজ থেকে শুরু করে পাঞ্জাবী, এমনকি ছোটদের পোশাকও। শুধুই কি পোশাক? যে কোনো পণ্যই আপনি এখন ঘরে বসে পেয়ে যাবেন শুধুমাত্র কয়েকটি ক্লিকে! কিন্তু প্রদীপের নিচেই যে অন্ধকার! অনলাইনে পছন্দের জিনিস কিনতে গিয়ে এবার প্রতারণার শিকার হলেন এক মহিলা।
শ্রীরামপুরের বাসিন্দা মানালী নাথ আওন নিজেও সামাজিক মাধ্যমে ব্যবসা চালান। ‘ডেইলি নিউজ রিল’-কে তিনি জানিয়েছেন, গত ১৪ সেপ্টেম্বর ফেসবুকে কেনাকাটার একটি গ্রুপে এক মহিলার লাইভ দেখে তাঁর কিছু জিনিস পছন্দ করেন। কেনার আগ্রহ প্রকাশ করতেই মহিলা তাঁকে ইনবক্সে যোগাযোগ করতে বলেন। কথাবার্তা এগোলে মহিলা তাঁকে জিনিসের মূল্যটি তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার করতে বলেন। গুগল পে-র মাধ্যমে টাকাটি সংশ্লিষ্ট অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। মহিলা আশ্বাস দেন যে এবার তিনি জিনিসটি তাঁর ঠিকানায় সময় মতো পার্সেল করে দেবেন।
সমস্যার সূত্রপাত ঘটে দু’চার দিন পর। হঠাৎই ওই মহিলা মানালী দেবীকে যাবতীয় যোগাযোগ মাধ্যমে ব্লক করে দেন। সন্দেহ হতে তিনি পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের ফোন থেকে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। বুঝতে পেরে সেই নম্বরগুলিও ব্লক করে দেওয়া হয়। টাকা পুনরুদ্ধারের জন্য অনেক চেষ্টা চরিত্র করেও কোনো লাভ হয়নি। যাবতীয় তথ্যপ্রমাণ সহ গত ২২ সেপ্টেম্বর শ্রীরামপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন মানালী। বর্তমানে কলকাতা সাইবার ক্রাইম সেল অভিযোগটির তদন্ত করছে। গোটা ঘটনায় কার্যত হতবাক মানালিদেবী। তাঁর কথায়, “চারপাশে পরিচিত অনেকের সাথেই এমন ঘটছে। অনেকেই ঝামেলা এড়াতে পুলিশে অভিযোগ জানান না। কিন্তু একজনেরও যথাযোগ্য শাস্তি না হলে আমরা আরও যারা একই পেশায় জড়িত, তাদেরও নাম খারাপ হচ্ছে। খুবই মানসিক চাপের মধ্যে আছি।” তবে সাইবার ক্রাইমের ভূমিকায় একেবারেই সন্তুষ্ট নন মানালী। সে কথাও তিনি জানাতে ভোলেননি ‘ডেইলি নিউজ রিল’কে।
ডিজিট্যালাইজেশনের যুগে মানুষের সুযোগ-সুবিধা বাড়ার সাথেই পাল্লা দিয়ে যেন বেড়ে চলেছে প্রতারণাও। কাজেই আইনের সাহায্যে সমস্ত অসাধু ব্যবসায়ী ও প্রতারকদের শায়েস্তা করাই সমাধানের একমাত্র পথ। সাথে অনলাইন টাকা পয়সার লেনদেনের ক্ষেত্রে মানুষকেও সর্বদাই থাকতে হবে সচেতন। একবিংশ শতাব্দীতে এসে এই ‘বিশ্বাস’ শব্দটির অস্তিত্ব আর কতদিন টিকে থাকবে, সেই প্রশ্নই যেন বারবার তুলে যায় এই প্রতারণার ঘটনাগুলো! আইনের দ্বারস্থ হয়েও এবার প্রতারক ধরা পড়বেন কি না, তা সময়ই বলবে!
Discussion about this post