“এই স্বপ্নগুলো বিক্রি নেই বাজারদরে চাপিও না।” অবশ্য ঈশান গাঙ্গুলীর গলায় গানের এই লিরিক্স শুনে অনেকেই চমকে উঠেছেন। অনেকেই হয়তো চমকাননি। কারণ ১১ জন মৌলিক বাংলা সঙ্গীত শিল্পীর উদ্যোগ যজ্ঞের সাক্ষী রইল তিলোত্তমা। সেখানে দর্শক হোক কিংবা ওই ১১ জন; অনেকেরই মনের কথা বলে ফেলেছে ঈশানের গানের এই লাইনটি। ইন্ডিপেনডেন্ট বাংলা গানের স্বর্ণযুগ যে ফুরায়নি, বরং সঠিক যৌথবদ্ধতায় যদি এগনো যায় তাহলে মৌলিক বাংলা গানের হীরক যুগও অধরা নয় তারই প্রমাণ দিল ৩ ডিসেম্বরের সেই পুজো।
আজ্ঞে ঠিকই শুনেছেন! পুজোই বটে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্দরে ত্রিগুণা সেন অডিটোরিয়াম মন্দিরে বসেছিল সেই পুজোর আসর। সেখানে পূজারী ছিলেন ১১ জন, বাংলা মৌলিক গানের অসংখ্য ভক্ত সমাগমে জমে উঠল মেহফিল। ধর্ম ছিল একটাই, সঙ্গীত। গাইব শুধু গানের ১১ জন যোদ্ধারা ছিলেন অভিষেক চক্রবর্তী, আকাশ চক্রবর্তী, অর্ক চট্টোপাধ্যায়, অনীক বিশ্বাস, অস্মিতা পাত্র, ঈশান গাঙ্গুলী, দেবর্ষি গাঙ্গুলী, কবীর চট্টোপাধ্যায়, সৌম্যদীপ রায়, তমাল কান্তি হালদার প্রমুখ। অক্লান্ত পরিশ্রম করে নিজেদের গান মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য তাঁরা নিজেরাই একেক জন উদ্যোক্তা হয়ে উঠলেন।
“বাংলা মৌলিক গান আসলে ফুরিয়ে গিয়েছে”, এই আপ্তবাক্যের মিথ্যে প্রমাণ হওয়ার দিনে হাজির ছিলেন ইন্ডাস্ট্রির ব্যাস্ততম মানুষরাও। অন্যদিকে ডেইলি নিউজ রিল আয়োজকদের তরফে কথা বলল, অভিষেক চক্রবর্তীর সঙ্গে। তিনি তাঁর প্রতিক্রিয়ায় জানান, যে কোনও জয়ই খুব প্রিয়। কিন্তু যেখানে একটি গোটা টিম জেতে তাঁর উপলব্ধি একেবারেই অন্যরকম হয়। এটি এমন একটি অনুষ্ঠান ছিল যেখানে ১১ জনই উদ্যোক্তা, ১১ জনই কনটেন্ট বানিয়েছে, পিআর থেকে শুরু করে সবকিছু করেছে। যারা দর্শক এসেছিলেন তাঁরা আরও বড় পরিসরে এরকম অনুষ্ঠান আবারও করার দাবী জানিয়েছেন। ‘মহীন এখন ও বন্ধুরা’র ম্যানেজার তথা তথ্যচিত্র নির্মাতা সুতপা ঘোষ বলেন, “বাংলা মৌলিক গান নিয়ে বহু জায়গায় কাজ হচ্ছে। যদিও সেগুলো এতোটাই ছড়িয়ে ছিটিয়ে যে বুঝতে পারা যায় না। একসাথে ১১ জন জোটবদ্ধ হয়ে কাজটা করল এটাই ভালো লাগছে। বুঝতেই পারছিলাম না যে কার গানে আরও জোরে হাততালিটা দেব।”
Discussion about this post