পোশাক হল এমনই একটি সামগ্রী যেটির বিবর্তন ঘটেছে সর্বাধিক মাত্রায়। সেই ইতিহাসের পাতা থেকে আজকের বর্তমান, পোশাক নিজেকে অভিযোজিত করে চলেছে মানুষের রুচিবোধের ভিত্তিতে। আর সেই সূত্র ধরেই পরিবর্তন ঘটেছে বস্ত্রশিল্পের প্রকৃতির। ভারতীয় বস্ত্রশিল্প এসবের বাইরে নয়। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর আর্থিক মন্দা দেখা দিলেও সেই সময়েই এদেশে গজিয়ে উঠল ঐতিহাসিক এক কটন মিল। আর সেটির অবস্থানও এই বাংলার ভূমিতে। শুরু হয়ে যায় ভারতীয় বস্ত্রশিল্পের নতুন এক অধ্যায়। আজ তবে ভারতের সেই প্রথম কটন মিলের ব্যাপারে কিছু তথ্যের সন্ধান দেওয়া যাক।
কলকাতার মেটিয়াবুরুজ হল বস্ত্রশিল্পের আঁতুড়ঘর। বস্ত্রের বিপননে সেইসময় বিশেষ খ্যাতি ছিল এই মেটিয়াবুরুজের। আর এখানেই ১৯১৯ সালে প্রতিষ্ঠা পায় ‘কেসোরাম কটন মিল’। ‘সুতোর কল’ নামেই বিশেষ পরিচিতি ছিল কারখানাটির। প্রথমের দিকে এই মিলটিতে শুধুই সুতির বস্ত্র উৎপাদন হত। কিন্তু পরবর্তীতে রেয়ন যন্ত্রের আমদানি ঘটল ১৯৫৯ সালে যেখানে প্রতি বছর ৪৬৩৫ রেয়ন সুতোর উৎপাদন ঘটত। এবছরই বিড়লার সাথে আঁতাতে প্রতিষ্ঠা হয় কেসোরাম রেয়ন। এরপরও কিন্তু থামেনি কেসোরাম শিল্পের ব্যপকতা। বস্ত্রের জোগানের সাথে সাথে চালু হল সিমেন্ট ও টায়ারের ফ্যাক্টরি। যার নতুন নামকরণ ‘কেসোরাম ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড’।
এরপর থেকে আর পেছন ফিরতে হয়নি এই কেসোরামকে। একের পর এক কারখানার পালক জুড়েছে তার মুকুটে। চারটি গ্লোবাল স্টক এক্সচেঞ্জ – ভারতের জাতীয় স্টক এক্সচেঞ্জ, বোম্বাই স্টক এক্সচেঞ্জ, কলকাতা স্টক এক্সচেঞ্জ অ্যাসোসিয়েশন এবং সোসিয়েট ডি লা বোরস ডি লাক্সেমবার্গও তালিকাভুক্ত। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর ভারতের মাটিতে চলে স্বদেশী দ্রব্য গ্রহন ও বিদেশী বয়কটের আন্দোলন। আর সেই ভয়ঙ্কর প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে এতগুলো প্রতিষ্ঠানের জন্ম হওয়াই ছিল একরকম, ভারতীয় শিল্পবিপ্লব।
চিত্র ঋণ – https://itihasanusondhan.blogspot.com/
Discussion about this post