বাঙালি মনে উৎসব যেন একপশলা বৃষ্টির পরে এক মিঠে রোদের মতো। উৎসবের এই দিনে তাই, মনের ঠিকানা পেরিয়ে বাড়ির ঠিকানায় ফেরা হয় না অনেকের। তাইতো, মা দুগ্গাকে ‘আবার এসো মা’ বলে বিদায় দেওয়ার পর মা তার মেয়ে লক্ষ্মীকে পাঠান সকলের ঘরে ঘরে ধনধান্যে ভরাতে। এরপর মা নিজেই কালী রূপে ধরা দেন সবার মনে। কথায় বলে, মা কালীর পুজো নাকি ‘মেয়ের বিয়ের রাতের মতো’। ওই একটা দিনই আলোয় আলোয় কাটে। মা কালীর বিসর্জন শেষে কার্তিক পুজো। ছেলে মেয়ের আবদার মা ফেলতে পারে না। তাই এবার মেয়ে লক্ষ্মীর পর মা তার ছেলে কার্তিককে মর্ত্যে পাঠালেন পূজিত হতে।
নৈহাটি, বারাসাত যেমন কালীপুজোর জন্য বিখ্যাত। তেমনই বাঁশবেড়িয়া কার্তিক পুজোর জন্য বেশ নামকরা একটি জায়গা। বাঁশবেড়িয়ার অনেক জায়গায় কার্তিক ঠাকুর পুজো হয়। তবে তারই মধ্যে জনপ্রিয় পুজো কমিটি হল ‘অনির্বাণ’। এইবছর অনির্বাণের পুজো ৪৮ বছরে পা রাখল। প্রতি বছরই কিছু না কিছু নতুন থিম করে চমক দেয় এই কমিটি। এ বছরও তার ব্যতিক্রম হয়নি। থিম হয়েছে ‘সংসদে তোলপাড়’। আজ্ঞে হ্যাঁ। রাজধানী দিল্লিতে এইবছর যে নয়া সংসদ ভবন তৈরি হয়েছে, তারই আদলে বানানো হয়েছে এই থিমটি। দিল্লির সংসদ ভবনে অধিবেশনও শুরু হয়েছে। তাই অনির্বাণের সংসদেও অধিবেশন চলবে দর্শকদের জন্য। মন্ডপে সংসদের অধিবেশনের নাট্যরূপ চিত্রিত হবে।
পুজো কমিটির প্রাক্তন সম্পাদক তথা বর্তমান সিনিয়র উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য সুশান্ত সরকার বলেন, “দীর্ঘদিন ধরেই আমরা নতুনত্ব থিম করি। বিগত দশ বছর ধরে এই পরম্পরা আমরা ধরে রেখেছি। এই বছর আমরা নতুন সংসদ ভবনের অনুকরণে মণ্ডপ তৈরি করছি। সেখানেই থাকবেন জামাই কার্তিক। সংসদের ভিতরে যে ভাবে অধিবেশন চলে, তারই কিছুটা কাল্পনিক চিত্র দর্শনার্থীদের সামনে নাট্যরূপ করে ফুটিয়ে তোলা হবে। সেই অভিনয় লাইভ চলবে।” তবে সবটুকুই কাল্পনিক। বাস্তবিক রাজনীতির সাথে কোনো সম্পর্ক নেই। দর্শনার্থীদের জন্য লাইভ চলবে বিকেল পাঁচটা থেকে রাত একটা পর্যন্ত। অন্যদিকে তিনি আরও জানান, পুজোর বাজেট চার লাখ টাকা। এবং এই মন্ডপে বয়স্ক ও বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন মানুষদের জন্য একটি আলাদা লাইন থাকবে। সংসদে তোলপাড়’ বাঁশবেড়িয়ায় কার্তিক পুজোর নয়া সংসদ ভবনের ছোঁয়া।
Discussion about this post