নালিকুলের পালাপাব্বনে দর্শকরা গাইলেন, যোগ্য সঙ্গত করল বাংলাদেশের গানের দল জলের গান। অথবা জলের গান এসে মিশলো আরেকবার পশ্চিমবঙ্গের চেতনার মাটিতে। আসলে এই প্রতিবেদনটি ঠিক কোন লাইন দিয়ে শুরু করা যেতে পারে সেই নিয়ে যে দ্বন্দ্ব, এর জন্য ডেইলি নিউজ রিল গণমাধ্যম সম্পূর্ণ রূপে দায়ী করছে বাংলাদেশের জলের গানকে। আজ্ঞে হ্যাঁ, ঠিকই শুনছেন। গান অবশ্যই একটি শিল্প, সেই শিল্পকে নিয়ে যাপন করে মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে পারেন অনেকেই। কিন্তু গানের সাথে একাত্ম করে দিয়ে দর্শকদের চোখে জল আনতে ক’জন পারেন? গান গাইতে গাইতেই দর্শকরা জড়িয়ে ধরতে পারেন অবলীলায় ক’জন শিল্পীকে? সংখ্যাটা খুবই কম। সেই কমের মধ্যেই রয়েছে লুকিয়ে এক মন খারাপের যম, যাদের মানুষ চেনে ‘জলের গান’ নামেই।
হুগলী জেলার নালিকুল গ্রাম। সেই নালিকুলের বাঁধের মাঠ এলাকার সাধারণ মানুষের চেতনার ফসল ‘পালাপাব্বন’ পা রাখল অষ্টম বছরে। আলাদা করে মঞ্চ বেঁধে নয়, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয় উঠোনেই। পটের গান থেকে শুরু করে বাউল সঙ্গীত সবই ছুঁয়ে যায় মন। এ যেন সত্যি সত্যিই “প্রাণের আরাম, আত্মার শান্তি।” গত ২ এপ্রিল, রবিবার, সেই মাটিকেই স্পর্শ করল জলের গান। বাংলাদেশের ময়মনসিংহ আর পশ্চিমবঙ্গের নালিকুলের এক হয়ে যাওয়া আটকাতে চূড়ান্ত ব্যর্থ হল কাঁটাতার। মিলে গেল আসলে হিসেবের বাইরে থাকা অনেক কিছুই। ঠিক যেন ‘অসম্ভবের সম্ভাবনা’।
এই মুহূর্তে গোটা ভারতীয় উপমহাদেশেই ব্যাপক হারে চাষ হচ্ছে ঘেন্না, হিংসার। চলছে তাঁর সফল উদযাপন। তাঁর মধ্যেই কিছু কিছু বোকারা স্বপ্ন দেখেন পৃথিবীটাকে নতুন করে সাজানোর। আর সেই বোকার লিস্টে অবশ্যই রয়েছেন নালিকুলের সাধারণ মানুষ এবং ‘জলের গান’ দল। নালিকুলে পারফরম্যান্স করতে এসে। দাঁড়ান, একটু ভুল বলে ফেললাম। নালিকুলের পালাপাব্বনের পাশে থাকতে এসে দর্শকদের মনে দীর্ঘস্থায়ী দাগ কেটে গেল ‘জলের গান’। ফের হয়তো সেই দর্শকরা জলের গানের জন্য চিরন্তন পিপাসা বুকে অপেক্ষা করে যাবেন।
Discussion about this post