পুজো মানে মিলন মেলা, পুজো মানেই বাতাসে মিশে যাওয়া শিউলি আর হাস্নুহানা। পুজো মানে কাশ ফুল, আকাশে ভেসে যাওয়া মেঘের ভেলা। পুজো মানেই ঢাকের বোল, হারিয়ে যাওয়া ছেলেবেলা। পুজো মানে প্রেম, নতুন জামা, আরো কত কী। কিন্তু এই অতিমারির কারণে আমরা যেন সেই শিকড়ের টান হারাতে বসেছি। ভাবুন তো, ঠিক এই সময় যদি আবারও ফিরে পেতাম সেই আমেজ! তাহলে ঠিক কেমন হতো? কেমনই বা হতো সেই হারিয়ে যাওয়া মুহূর্ত? সেই স্বাদ পেতে হলে আমরা দেখতে হবে প্রিয়াণের পুজোর গান ‘যদি এমন হতো’।
গানের শুরুতেই দেখা যাচ্ছে সারিবদ্ধ কাশ ফুল আর মুঠোয় ভরা শিউলি, যা মনকে নিমেষেই নস্টালজিক করে তোলে। অনবদ্য দৃশ্যপট, গানের কথা ও সুরের মেলবন্ধন আমাদের হতাশাগ্রস্ত মনকে এনে দেবেই দেবে বিশল্যকরণীর সন্ধান। গানে একদিকে যেমন সদ্য কিশোরীর মনে ফুটে ওঠা অব্যক্ত প্রেমের শতদল, পাশাপাশি হারিয়ে যাওয়া নির্ভেজাল শৈশবকেও তুলে ধরা হয়েছে। কাশ থেকে শিউলি, সবুজ ঘাস থেকে ছাদ বাগান, মণ্ডপ সজ্জা থেকে মায়ের প্রতিমায় তুলির টান, সবটাতেই যেন লেগে শিল্পীর ভাবনার রঙ। করোনার সঙ্গে যখন লড়াই করতে করতে মানুষ ক্লান্ত, সেই সময়ের বুকে দাঁড়িয়ে প্রিয়াণের ‘যদি এমন হতো’ যেন হাতের মুঠোয় অক্সিজেন ক্যান।
মহামারীতে স্বজন হারানোর বেদনা, দীর্ঘ লকডাউনে নেমে আসা অর্থনৈতিক ক্ষত আমাদের কোণঠাসা করে ফেলেছে অনেকটাই। কিন্তু ইতিহাস বলছে সভ্যতার কাছে বারবার পরাজিত হয়েছে মহামারী। আসলে হোঁচট খেয়ে মাটিতে পড়ে গেলেই কেউ হেরে যায় না, হেরে যায় সেই যে আসলে পড়ে গিয়েও উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে না। তাই যুদ্ধজয়ের চরম অস্ত্র গানকে হাতিয়ার করেই প্রিয়াণ তার পজিটিভ বার্তা মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে চাইলেন। ‘যদি এমন হতো’ ইতিমধ্যেই বাজিয়ে দিল করোনার বিরুদ্ধে শেষ যুদ্ধের সাইরেন। স্মৃতিকে আরও বেশি করে আঁকড়ে ধরে এই পুজোয় মানুষ হয়ে উঠুক সংযমী, করোনাকে বর্তমান থেকে ইতিহাসের পাতায় পুরোপুরি পৌঁছে দেওয়ার কাজ এভাবেই শুরু হোক।
Discussion about this post