আর যাই করা হোক, বাঙালির ভ্রমণবিলাসিতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা একেবারেই যায় না। তা সে যে কালই হোক, পায়ের তলায় সর্ষে যেন লেগেই রয়েছে। মন খারাপ হোক বা মন ভালো সব কিছুতেই ঘুরতে যাওয়াটা একেবারে মোক্ষম দাওয়াই। আর এখন বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের সুবাদে অফবিট জায়গাগুলো হয়ে উঠেছে অন্যরকম এক আকর্ষণ। এখন মানুষ আর ভিড় বা কোলাহলের মধ্যে দিয়ে নয়, নির্জনতার মধ্যে দিয়েই খুঁজে পায় প্রকৃতির সৌন্দর্যকে। তেমনই এক জায়গার হদিশ জেনে নিন চটপট। উড়িষ্যা উপকূলের নতুন এক সমুদ্র সৈকত, নাম যমুনাশোল। বাগদা থেকে ৪০ কিমির মধ্যেই সদ্য জনপ্রিয় হতে শুরু করা এক অসাধারণ মন ভালো করা জায়গা।
খুব আকর্ষণীয় কিছু চোখে না পড়লেও অনুভব করবেন আশ্চর্য এক নীরবতা সারা জায়গাটা জুড়ে। এই সমুদ্র সৈকতকে জনপ্লাবনের ছিটেফোঁটাও এখনও স্পর্শ করেনি। বিস্তীর্ণ সমুদ্রসৈকত, উঁচু উঁচু ঝাউ গাছ, দিগন্ত বিস্তৃত ঝাউবন– এসব কিছুই যেন এক অন্য পৃথিবীর নিদর্শন। রোজকারের ব্যস্ততাময় জীবন থেকে ছুটি পেয়ে একটু নির্জনতা উপভোগ করতে চাইলে এই যমুনাশোলের জুড়ি মেলা ভার। অবশ্য ধীরে ধীরে মানুষের আনাগোনা এই সমুদ্র সৈকতের নির্জনতাকে ভাঙতে শুরু করেছে। কিছু ক্যাম্পলোভী মানুষজন একটু ভিড় জমাচ্ছেন বটে, কিন্তু তাতে আপনার হতাশ হওয়ার কোনো কারণই নেই।
কী ভাবছেন? যাবেন কী করে? যদি ট্রেনে করে যেতে চান তাহলে কাছাকাছি রেলওয়ে স্টেশন হল বাস্তা, মাত্র ৩১ কিমি দূরেই। কলকাতা থেকে যেতে চাইলে আপনাকে ধৌলি এক্সপ্রেস ধরে বেরিয়ে পড়তে হবে। অবশ্য আপনি চাইলে জলেশ্বর স্টেশনেও নামতে পারেন, সেখান থেকে মোট ৪১ কিমি দূরে এই সমুদ্র সৈকত। আর গাড়ি করে যেতে চাইলে ৪১ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে জলেশ্বর পার করার পর গান্ধীচক থেকে বাস্তা বালিয়াপাল রোড ধরতে হবে। সেভাবে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে জায়গাটি না গড়ে ওঠায় থাকার জায়গা সেভাবে এখনও তৈরি হয়নি। ক্যাম্প খাটিয়ে অবশ্য সৈকতের বুকেই থাকা যায়। তবে একটি ফার্ম হাউস রয়েছে যেখানে ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকার মধ্যে এসি কিংবা নন-এসি রুম পাওয়া যায়। তাহলে আর কী! সামনেই পুজো, তাই যাঁরা শহুরে কোলাহল থেকে কিছুদিনের ছুটি নিতে চান। কাজের কথা ভুলে বিশ্রাম নিতে চান, তাঁরা টুক করে বেরিয়ে পড়ুন যমুনাশোল সমুদ্র সৈকতের উদ্দেশ্যে।
চিত্র ঋণ – শঙ্খদীপ দত্ত
Discussion about this post