আজকাল নির্বাচনের নামে দাঙ্গা হাঙ্গামা, গুলিগালাজ, অত্যাচার এসব কিছুই খুব সাধারণ জনগণের কাছে। জেতার লড়াইয়ে কেউ এক কণাও মেদিনী ছাড়তে নারাজ। ভোটের আবহে এসব ঘটনাই নিউজ চ্যানেল গুলোতে উত্তেজনা বাড়িয়ে চলেছে। তবে এমন একজন ব্যক্তি যিনি জীবনে প্রায় ২৩৮টি নির্বাচন লড়েছেন, কিন্তু সবকটিতেই ব্যর্থ। তাতে কী? তিনি আবারও প্রস্তুত আসন্ন লোকসভা ভোটে দুটি সংসদীয় নির্বাচনী এলাকা থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে–তামিলনাড়ুর ধর্মপুরী এবং কেরালার ত্রিশুর। নাম ড. কে পদ্মরাজান। ৬৫ বছর বয়সী এই প্রার্থী তামিলনাড়ুর সালেম জেলার মেটুরের বাসিন্দা। হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক থেকে তিনি এখন একজন টায়ার মেরামতি দোকানের মালিক।
‘নির্বাচন রাজা’ খেতাবপ্রাপ্ত পদ্মরাজন গত ৩৬ বছরে ছয়টি রাষ্ট্রপতি নির্বাচন, ছয়টি উপ-রাষ্ট্রপতি নির্বাচন, ৩২ টি লোকসভা নির্বাচন, ৫০টি রাজ্যসভা নির্বাচন এবং ৭৩টি বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। শুধু তাই নয়, বছরের পর বছর ধরে তিনি অটল বিহারী বাজপেয়ী, মনমোহন সিং, প্রণব মুখার্জি, প্রতিভা পাতিল, কে আর নারায়ণন এবং এপিজে আবদুল কালাম সহ রাজনৈতিক বৃত্তের বড় বড় নেতামণ্ডলীর বিরূদ্ধে ভোটে দাঁড়িয়েছেন। এমনকি তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, রাহুল গান্ধী, জয়ললিতা এবং জগদীশ শেট্টারের বিরুদ্ধেও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তার এই প্রতিটি নির্বাচনে ব্যর্থতা তাকে ইন্ডিয়া বুক রেকর্ডস এবং লিমকা বুক অফ রেকর্ডসে দিয়েছে বিশিষ্ট একটি স্থান। তাই তাকে বলা হয় ‘India’s Most Unsuccessful Candidate’।
তিনি এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, “আমি যতবার মনোনয়নপত্র জমা দিই, ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করি আমি যেন নির্বাচনে হেরে যাই… নির্বাচনে জেতার কোনো সুযোগ নেই। আমি একদিন জিতলে হার্ট অ্যাটাক করব। এই ধাক্কা সামলাতে পারব বলে মনে হয় না।” তিনি আরও বলেছিলেন যে, “আমার প্রতিপক্ষ কে তা বিবেচ্য নয়। আমার একমাত্র লক্ষ্য শুধু নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা। জয়-পরাজয় নির্ভর করছে ভোটারদের ওপর।” জীবনে অনেকসময় তাকে ব্যঙ্গ বিদ্রুপের শিকার হতে হয়েছে। কিন্তু তবুও তিনি কখনই পিছপা হননি। আজকের দিনে দাঁড়িয়ে সত্যিই তিনি স্যালুট জানানোর মতই একজন, প্রকৃত অনুপ্রেরণা!
Discussion about this post