অ্যালকোহল যে স্বাস্থ্যের পক্ষে কতটা ক্ষতিকারক, এটা প্রায় প্রত্যেকেরই জানা। কিন্তু তারপরেও বিশ্বের সর্বাধিক বিক্রিত জিনিসগুলির মধ্যে অ্যালকোহল একটি। সময়ের সাথে সাথে অ্যালকোহল উঠেছে আমাদের জীবনযাপনের অন্যতম অংশ। সামাজিক কিংবা পারিবারিক অনুষ্ঠান, অ্যালকোহল হয়ে উঠেছে প্রমোদের গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। মদের মধ্যে রয়েছে ওয়াইন, বিয়ার, হুইস্কি। তবে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে বিয়ারের জনপ্রিয়তা সবচেয়ে বেশী।
চলতি বছরে ফোর্বসের একটি প্রতিবেদন অনুসারে, বিশ্বের ২৫ টি সর্বাধিক বিক্রিত হুইস্কি ব্র্যান্ডের মধ্যে ১৩ টিই ভারতীয় ব্র্যান্ড। প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বেশী হুইস্কি ব্যবহার ভারতেই। ভারতের পরেই রয়েছে আমেরিকা, ফ্রান্স ও জাপান। তালিকা শুরুতেই রয়েছে ভারতীয় ব্র্যান্ড ‘ম্যাকডাওয়েলস’। এটি ওয়ার্ল্ড নাম্বার ওয়ান হুইস্কি নামে পরিচিত। এটি ‘ইউনাইটেড ব্রিউয়ারিজ’ কোম্পানি দ্বারা তৈরি। দুই,তিন ও চতুর্থ নম্বরেও রয়েছে ভারতীয় ব্র্যান্ড। সেগুলি হল ‘অফিসার্স চয়েস’, ‘ইম্পেরিয়াল ব্লু’, ‘রয়্যাল স্ট্যাগ’। পঞ্চম নম্বরে রয়েছে স্কটিশ কোম্পানি ডিয়াজিওর ‘জনি ওয়াকার’। ষষ্ঠ নম্বরে রয়েছে আমেরিকান ‘জ্যাক ড্যানিয়েলস’। সাত নম্বরে রয়েছে ভারতীয় ব্র্যান্ড জন ডিস্টিলারিজের ‘অরিজিনাল চয়েস’। আট নম্বরে রয়েছে আমেরিকান কম্পানি ‘জিম বিম’।
নবম ও দশম স্থানে আবার ভারতীয় ব্র্যান্ডেরই ছাপ। নবম ও দশম স্থানে রয়েছে ‘হেওয়ার্ডস ফাইন’ ও ‘৮ পি.এম’। তালিকার এগারোতম স্থানে আছেন আয়ারল্যান্ডের কোম্পানি পেরনড রিকার্ডের ‘জেমসন’। কানাডার ‘ক্রাউন রয়্যাল’ রয়েছে বারো নম্বরে। তেরো নম্বরে রয়েছে স্কটল্যান্ড ‘ব্যালানটাইনস’। চোদ্দ, পনেরো, ষোলো ও সতেরো নম্বরে রয়েছে ভারতীয় ‘ব্লেন্ডার্স প্রাইড’, ‘ব্যাগপাইপার’, ‘রয়্যাল চ্যালেঞ্জ’ ও ‘ওল্ড টেভার্ন’। তালিকার আঠেরো নম্বরে রয়েছে জাপানি ব্র্যান্ড ‘কাকুবিন’ ও উনিশ নম্বরে রয়েছে স্কটল্যান্ডের ‘সিভাস রিগাল’। ভারতীয় ব্রান্ড ব্যাঙ্গালোরের ‘মল্ট হুইস্কি’ রয়েছে কুড়ি তম স্থানে। একুশ তম স্থানে রয়েছে স্কটিশ ব্র্যান্ড ‘গ্রান্টস’। ভারতীয় ‘ডিরেক্টরস স্পেশাল’ রয়েছে ২২ তম স্থানে। ২৩ নম্বরে রয়েছে জাপানের ‘নিক্কা ব্ল্যাক’। ২৪ তম ও সর্বশেষ অর্থাৎ ২৫ তম স্থানে রয়েছে স্কটল্যান্ডের ‘উইলিয়ামস লসনস’ ও ‘দেওয়ারস’।
ফোর্বসের এই প্রতিবেদনে ভারতবাসীর যেন চোখে জল, মুখে হাসি আনার মত অবস্থা। এই খবর মদপ্রেমীদের কাছে মধুর হলেও সমাজের পক্ষে বেশ ক্ষতিকর। এর প্রভাব সরাসরি পড়তে পারে সমাজের যুব সমাজের উপর। বিশেষজ্ঞদের মতে, “মদ্যপান ও ধূমপান স্বাস্থ্যের পক্ষে হানিকারক অথচ বিশ্বজুড়ে এরই রমরমা বাজার ও প্রচার। ক্রীড়া ও বিনোদন জগতে সিংহভাগ নিয়ন্ত্রণ করে মদ ও ধুমপানের বিজ্ঞাপন। এভাবে চলতে থাকলে সমাজের যুব সমাজের ভবিষ্যত নিয়ে এক প্রশ্ন চিহ্ন থেকেই যায়।”
Discussion about this post