উৎসবমুখর এই ডিসেম্বর মাস। শীত সবে জাঁকিয়ে বসতে চলেছে। সেই ঠান্ডা আমেজের সঙ্গেই আলোর সাজ, কেকের বাহার, কফির গন্ধে মাতাল শহর। কারণ, বড়দিন আসছে। জিশু খ্রীস্টের জন্মদিন, আর তার সঙ্গে লাল টুপি, লাল কোট পরা এক বুড়োও আসবেন। স্লেজ গাড়ি চড়ে ঘণ্টা বাজিয়ে আনবেন খুশির সুর। সেই বুড়োর নাম সান্তা ক্লজ। আর বাঁকুড়ার এক গ্রামে বসে আনন্দ উপহার দিয়ে যাওয়া খোদ সান্তা ক্লজকে আনছেন এক নারী। সঙ্গে আসছে আরও দশগুণ আনন্দ, আর্থিক নিরাপত্তা আর আত্মবিশ্বাস।
বাঁকুড়া জেলার, ইন্দাসের বোনপুকুর গ্রামের এক নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের নারী কাজী নূরজাহান। উল এবং কাঁটা দিয়ে, শুধুমাত্র ৬০ টাকার খরচে নূরজাহান তৈরি করেন সান্তা ক্লজ। সেই হাতে তৈরি সান্তা ক্লজ পাইকারি ৮০ টাকা দরে বিক্রি হয়। বছরের অন্যান্য সময় কাঁটা ও উল দিয়ে অন্যান্য সামগ্রী তৈরি করলেও, নূরজাহান জানান, যে এই বড়দিনের আগে সান্তা ক্লজের চাহিদা থাকে অনেকটাই বেশি। আগে তাঁর স্বামীর উপার্জনেই সংসার চালাতে হত, বর্তমানে নূরজাহানও একজন স্বাধীন শিল্পী ও ব্যবসায়ী হয়ে উঠেছেন। হাল ফিরেছে সংসারের।
স্বনির্ভর গোষ্ঠীতে নাম লেখানোর পরেই নূরজাহান হাতের কাজ শিখেছেন বলে জানিয়েছেন। স্থানীয় বিডিও অফিসে নিয়মিত প্রশিক্ষণ মিলেছিল বলেই, আজ তাঁর হাতের তৈরি সামগ্রী এতখানি সফল হতে পেরেছে বলে তিনি মনে করেন। খুবই সাধারণ পরিবারের এই গ্রাম্য গৃহবধূও যে এইভাবে স্বনির্ভর হওয়ার পথে এগিয়ে যেতে পারেন, তারই একটি জ্বলন্ত দৃষ্টান্ত তৈরি করেছেন নূরজাহান। এই গল্প তাই যতটা না সান্তা ক্লজের, তার চেয়ে বেশি কাজী নূরজাহানের।
Discussion about this post