ছোটবেলায় অনেকেই আমরা কাকেশ্বর কুচকুচে কিংবা দ্রিঘাংচুর গল্প অল্প বিস্তর পড়েছি বা শুনেছি। সুকুমার রায় তাঁর লেখায় এমন বহু পাখির বর্ণনা দিয়ে গেছেন। কিন্তু বাস্তবেও অনেক পাখি আছে, যাদের দেখলে মানুষ আশ্চর্য্য হবে। ‘গাছে কাঁঠাল গোঁফে তেল’ এই কথাটা প্রায়ই আমরা ব্যবহার করি। কিন্তু, ধরুন দেখলেন কাঁঠাল গাছে বসে কোনো পাখি নিজের গোঁফে তেল দিচ্ছে! তখন? অবশ্য এমন কিছু দেখার সম্ভাবনা ‘ হ জ ব র ল’ -এর পাতার বাইরে নেই বললেই চলে। কিন্তু এই গোঁফওয়ালা পাখির অস্তিত্ব নিছক কিন্তু কল্পনা নয়। ঠিক এরকমই এক পাখি হলো ইনকা টার্ন।
হ্যাঁ! দক্ষিণ আমেরিকার এক প্রজাতির পাখিতে দেখতে পাওয়া যায় গোঁফ। ঠোঁটের মাঝ বরাবর থেকে বেরিয়ে আসা এই সুন্দর সাদা গোঁফ মুখের দুদিকে বিস্তৃত। বলা বাহুল্য এদের কিন্তু মানুষের মতো লিঙ্গ বৈষম্য নেই। অর্থাৎ নারী পুরুষ নির্বিশেষে এই বিশেষ গোঁফটি সবার থাকে। আর গোঁফ যার যত এবং বেশি লম্বা সে তত বেশি শক্তিশালী ও সবল বলে মনে করা হয়। এই পাখিরা সাধারণত একসাথেই থাকে ও ঘুরে বেড়ায়। তবে ‘ইনকা’ শব্দের সাথে ইনকা সভ্যতার সামান্য যোগসুত্রও রয়েছে। দক্ষিণ আমেরিকার এই পাখির প্রজাতিটি বংশবৃদ্ধি করে পেরু থেকে চিলি মধ্যবর্তী অংশে। যা ইনকা সভ্যতার প্রাণকেন্দ্র ছিল এক সময়। আর তাই এই পাখিদের এরূপ নামকরণ।
এই ইনকা টার্নদের খাবার সাধারণত ছোট মাছ। তাই এরা থাকার জন্য দক্ষিণ আমেরিকার পশ্চিম উপকূল বরাবর সমুদ্র অঞ্চল বেছে নেয়। কিন্তু মাঝে মাছ আহরণের পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ার জন্য সমুদ্রে মাছের পরিমাণ কমতে থাকে। যার প্রভাব পড়ছিল এই পাখিদের ওপরেও। এই প্রজাতিকে বাঁচিয়ে রাখা গোটা মানব জাতির দায়িত্ব। পৃথিবীর যা কিছু সুন্দর তাকেই আমাদের রক্ষা করে রাখতে হবে পরবর্তী প্রজন্মের জন্য। তাই, পরবর্তীকালে পেরু সরকার এই বিষয়ে সতর্ক হয় এবং এই অঞ্চলে মাছ ধরা কমিয়ে দেয়। তবে সাইক্লোন ও উপকূলীয় বেড়ালের উপদ্রবে এই প্রজাতি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
Discussion about this post