ফুটবল, বাঙালির জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। আর ফুটবল বিশ্বকাপ, ফুটবল প্রেমীদের কাছে সবচেয়ে সুবর্ণসময়। সারা বিশ্বের বহু ফুটবল প্রেমীরা চার বছরের জন্য অপেক্ষা করে থাকেন ফুটবলের এই মহাযুদ্ধের জন্য। আর ফুটবলের এই উন্মাদনায় গা ভাসিয়েই, তার প্রিয় দল বিশ্বকাপ জিতলে বিনা ভাড়ায় যাত্রী তোলার কথা ঘোষণা করে সকলকে অবাক করে দেন রামপুরার আবু তাহের। আবু তাহের পেশায় একজন রিকশাচালক। তবে পেশা ও নাম ছাপিয়ে সবাই তাকে চেনে মেসি ও আর্জেন্টিনার একান্ত ভক্ত হিসেবেই।
রামপুরা-বনশ্রী এলাকায় গেলেই দেখা মেলে আর্জেন্টিনাভক্ত আবু তাহেরের। প্রিয় দলের আকাশি-সাদা রঙে সাজানো তার রিকশা। তার তিন চাকার বাহনে উড়ছে বাংলাদেশ ও আর্জেন্টিনার পতাকা। রিকশার সামনে ঝুলছে মেসির নাম লেখা একটি ফুটবলও। তার নিজের গায়েও আর্জেন্টিনার জার্সি। আর্জেন্টাইন এই ভক্তকে রাস্তায় দেখলে থমকে দাঁড়ান অনেকেই। ছবি তুলতে চান তার সাথে। বিশ্বকাপের মরসুমে ফুটবলে মেতে ওঠেন বহু মানুষ। তবে আবু তাহের তাদের সবার থেকে আলাদা। শুধু বিশ্বকাপ নয়, আবু তাহের সারাবছরই থাকেন এমন সাজেই। তার রিকশাও এভাবেই সাজানো থাকে সারা বছর। আর্জেন্টিনাকে তার সমর্থনের কারণ জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, “মারাদোনার খেলা দেখেই প্রথম আর্জেন্টিনার প্রেমে পড়ি। তখন তো সাদাকালো টিভি ছিল। ২০১৭ সালে বিশ্বকাপ বাছাইয়ে আর্জেন্টিনা প্রায় ছিটকেই যাচ্ছিল। সেখান থেকে মেসি দলকে টেনে তোলেন। তখন থেকে তার খেলাও ভালো লাগে। তখন এত ভালো লেগেছিল যে আমি আমার রিকশা ও ড্রেসআপ বদলে ফেলি।”
তার কথায়, “আমরা অনেক দিন শিরোপা জিততে পারিনি। তবে এবার মন বলছে মেসি বিশ্বকাপ জিতবে।” তখনই তিনি জানান যে, তার দল সেমিফাইনালে ওঠার পর থেকেই বিনা ভাড়ায় রিকশা চালাবেন। আর বিশ্বকাপ জিতলে এক সপ্তাহ ফ্রি সার্ভিস দেবেন তিনি। তবে এত উৎসাহের মাঝেও কিছুটা আক্ষেপের সুরে তিনি জানান, ‘রিকশা তো ঠিকমতো চালাতে পারি না। রিকশা নিয়ে নামলেই মানুষ ঘিরে ধরে। ছবি তুলতে চায়। কষ্টেই আছি বলতে গেলে। ইচ্ছা ছিল মহল্লার মাঠটা আর্জেন্টিনার জার্সি দিয়ে ভরিয়ে ফেলব। কিন্তু টাকার অভাবে পারছি না।”
Discussion about this post