মানুষ সামাজিক জীব। কোনও মানুষ একা সবার থেকে পৃথক হয়ে বাস করতে পারেনা। সমাজে প্রতিবেশীদের উপর প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে মরা প্রত্যেকেই নির্ভরশীল। কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া প্রত্যেক দেশেরও এক বা একাধিক প্রতিবেশী দেশ থাকে। তাই শুধুমাত্র কোনও ব্যাক্তিই নয়, প্রতিটি রাষ্ট্রেরও সমৃদ্ধি নির্ভর করে আশেপাশের প্রতিবেশী রাষ্ট্রের পদক্ষেপের ওপর। ভারতের প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলির মধ্যে বাংলাদেশের সাথে তাদের সম্পর্ক সবচেয়ে গভীর। এই মধুর সম্পর্কের নজিরই ধরা পড়ল পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া নিবাসী এক মহিলার শেষযাত্রায়।
ঘটনাটি ঘটেছে নদীয়ার অন্তর্গত মাটিয়ারী গ্রামে। এই গ্রামেই বাস করতেন ইলা মন্ডল। গত সপ্তাহে মারা যান তিনি। তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর পরিবার বিএসএফের কাছে আবেদন জানায়, “বাংলাদেশের চুয়াডাঙ্গায় তাদের আত্মীয়রা বসবাস করেন। তাই চুয়াডাঙ্গায় বসবাসকারী তাদের আত্মীয়দের শেষবার ইলাদেবীকে দেখার সুযোগ করে দিতে।” পরিবারের ইচ্ছেকে পূরণ করতে, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)-এর সঙ্গে যোগাযোগ করে বিএসএফ।
বিএসএফের সদিচ্ছাকে সম্মান জানিয়ে সম্মতি জানায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ। জিরো পয়েন্টকে বেছে নেওয়া হয় শেষ দেখার জন্য। সেই মতো জিরো পয়েন্টে নিয়ে আসা হয় আত্মীয়-স্বজনদের। সেখানেই নিয়ম মেনে ইলা দেবীকে প্রতি শ্রদ্ধা জানান তার আত্মীয়রা। দুই দেশের এই সহমর্মিতাকে কুর্নিশ জানিয়েছেন দুই দেশে বসবাসরত ইলা দেবীর আত্মীয়রা। তাদের মতে, দুই দেশ থেকেই যথেষ্ট সাহায্য পেয়েছি। আগামী দিনে দুই দেশের মানুষের মধ্যে আরো সু-সম্পর্ক ও যোগাযোগ গড়ে উঠবে এই আশা রাখি।
দুই দেশের সীমান্তরক্ষীদের তৎপরতায় এইভাবেই বাংলাদেশের চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার সোনা মসজিদ বর্ডার ও পশ্চিমবঙ্গ মোহদিপুর বর্ডারে দু’দেশের আত্মীয়দের মাঝে মৃতদেহ দেখানো হয়। মৃত ব্যক্তির শেষ ইচ্ছেপূরণে, দু দেশের মধ্যে এই বোঝাপড়া সত্যিই দৃষ্টান্ত। বিএসএফের কমান্ডিং অফিসার দেশরাজ সিং জানান- “সীমান্ত পাহারা দেওয়ার পাশাপাশি, মানুষের সুখ দুখে পাশে থাকাও তাদের কর্তব্য।”
Discussion about this post