কলকাতা থেকে মাত্র ৫০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলার মনোরম একটি জায়গা হল ডায়মন্ডহারবার। কলকাতার খুব কাছেই অফ বিট জায়গা হিসেবে এই জায়গাটি পর্যটকদের মনে আলাদাই জায়গা নিয়ে আছে। হুগলি নদী বা গঙ্গা নদীর পূর্ব পাড়ে অবস্থিত ছোট্ট এই শহরে বছরের বিভিন্ন সময়ে শহর এবং শহরতলির বিভিন্ন মানুষেরা আসেন এবং নদীর সৌন্দর্য উপভোগ করেন। এমনকি শীতের আমেজে পিকনিক স্পট হিসেবেও ডায়মন্ড হারবার বা নদীর পাড়ে পর্যটকদের আনাগোনা বেড়েছে যথেষ্ট। কিন্তু কিছু মানুষের অসচেতনতার দরুন দেখা যায় যে পিকনিক স্পট থেকে শুরু করে নদীর পাড়ে তারা জলের বোতল, কোল্ড ড্রিঙ্কস ও বিয়ারের ক্যান, চিপস-বিস্কুটের প্যাকেট, থার্মোকলের থালা বাটি এবং প্লাস্টিক- এসব ছড়িয়ে জায়গাটির সৌন্দর্যে ব্যাঘাত সৃষ্টি করেছে।
পুরসভার উদ্যোগে পচনশীল এবং অপচনশীল ডাস্টবিনের ব্যবস্থা করা হলেও পর্যটকরা সেই দায়িত্ব পালনে বিরত থেকেছেন। ফলস্বরূপ নদীতে জোয়ারের সময় নোংরাগুলো জলে ভেসে গিয়ে জলজ প্রাণীকুল তথা বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য নষ্ট করে চলেছে দিনের পর দিন। তাই নদীকে তার আপন বেগে চলতে দেওয়ার মন্ত্রে সামিল হয়েছেন সুন্দরবনের পরিবেশ সৈনিক শুভ্রদীপ বৈদ্য। তার ‘আবর্জনা পরিষ্কার ও নদী দূষণ নিয়ে জনগণের মধ্যে সচেতনতার কর্মসূচি’তে সামিল হয়েছেন সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে সমাজে বেশ কিছু সচেতন পরিবেশপ্রেমী বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। প্রথম পর্যায়ে কর্মসূচি শুরু হয় চলতি বছরের অক্টোবরের ৩০ তারিখ এবং দ্বিতীয় কর্মসূচিটি অনুষ্ঠিত হল ২০ নভেম্বর, সকাল ১০ টা থেকে। দ্বিতীয় এই কর্মসূচিতে তারা পাশে পেয়েছিলেন বিশিষ্ট পরিবেশ গবেষক ডঃ মৈনাক মন্ডল এবং ডঃ প্রবাল পাত্রকে।
এই কর্মসূচির অন্যতম এক পরিচিত মুখ শুভ্রদীপ বৈদ্য জানিয়েছেন যে, আগামী দিনে এই ধরনের কর্মসূচি চলতে থাকবে। বিশেষ করে শীতের মৌসুমে এই ধরনের কর্মসূচি আরো বেশি করে করা যায় কিনা তার ভাবনা-চিন্তাও করা হচ্ছে। নদী বাঁচলে, তবেই বাঁচবে প্রাণীকুল। এভাবেই শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি চালিয়ে যেতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ তারা। আশা করা যায় আগামী দিনে তাদের এই কর্মসূচির প্রভাব জনসাধারণের মধ্যে আরও বেশি করে পরিবেশ সচেতনতা বাড়িয়ে তুলবে।
Discussion about this post