করোনা ভাইরাসের ছোবলে এখন সর্বত্রই আতঙ্কের ছায়া। মাস্ক পড়লে করোনার থেকে নিরাপদ রাখা যাবে, এই ধারণার বশবর্তী হয়ে মানুষ ওষুধের দোকানে খুঁজে চলেছেন মাস্ক। কোথাও কোথাও দশ বা কুড়ি টাকার মাস্ক দেড়শো টাকাতেও বিক্রি হচ্ছে। কোথাও আবার হাসপাতালের ফেলে দেওয়া ‘ডিসপোসেবল মাস্ক’ তুলে নিয়ে গিয়ে পরিষ্কার করে বিক্রি হচ্ছে। এভাবেই আতঙ্ককে পুঁজি করে মুনাফা লুঠছেন বেশ কিছু অসাধু ব্যবসায়ী।
ঠিক এই পরিস্থিতিতেই বাড়িতে মাস্ক বানানোর উপায় বাতলালেন গড়িয়া অঞ্চলের দুই শিক্ষক- শিক্ষিকা। গড়িয়ার মহামায়াপুর আদর্শ বিদ্যাপীঠের শিক্ষিকা সুপর্ণা রাহা ও শিক্ষক প্রদীপ্ত কুমার মন্ডলের মস্তিষ্কজাত পরিকল্পনা ফেলেছে সাড়া। মূলতঃ তাঁদের উদ্যোগেই করোনা ভাইরাস নিয়ে স্থানীয় বিবেক ভারতী শিক্ষা সদন উচ্চ বিদ্যালয়ে এক সচেতনমূলক শিবিরের আয়োজন হয়। প্রধান শিক্ষক অমিত প্রধান সহ শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং পড়ুয়ারা অংশগ্রহণ করে। অল্প খরচে নিজের হাতে মাস্ক বানানোর শিক্ষা দেওয়া হয় অই শিবিরে। যদিও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাধারণ মাস্ক পরে ভাইরাসের হাত থেকে রেহাই পাওয়া যাবে, ধারনাটি সঠিক নয়। কারণ এটি কোনভাবেই বায়ু-বাহিত ভাইরাস নয়। তাছাড়া একমাত্র রোগী বা তার আশেপাশে থাকা মানুষেরই উচিৎ মাস্ক ব্যবহার করা। তবুও ভাইরাস ঘটিত ভয় কাটাতে প্রায় সবাই মাস্ক পরছেন।
শিক্ষিকা সুপর্ণা রাহা বলেন, শুধু করোনা ভাইরাসই নয়; সারাবছর যে কোনো ভাইরাস সংক্রমণ বা দূষণ এড়াতে এই মাস্ক ব্যবহার করতে পারেন। মাস্ক বানানোর পদ্ধতিটি খুবই সাধারণ। একটি রুমালের আকারের মেডিকেটেড টিস্যু পেপারকে নিয়ে ভাঁজ করতে হবে। তারপর দুই দিকে দুটি গার্ডার, স্টেপলার বা পিনের সাহায্যে লাগিয়ে দিতে হবে। ব্যাস, তৈরি মাস্ক। মেডিকেটেড টিস্যু বাজার চলতি যে কোনো ওষুধের দোকানেই পাওয়া যায়। এর খরচ খুবই কম। ফলে ছাত্র-ছাত্রীরাও নিজের হাতে মাস্ক বানিয়ে ফেলতে পারছে অনায়াসেই। সুপর্ণা রাহা জানান, তাঁদের উদ্দেশ্য ছিল কোন ভাবেই খুদে পড়ুয়াদের মনে ভাইরাসের ভয় যেন প্রবেশ না করতে পারে। তারা যেন ভয়কে জয় করে মন দিয়ে পড়াশোনা করতে পারে। শুধু মাস্ক বানানোই নয়, রাস্তায় রাস্তায় লিফলেট বিলি থেকে শুরু করে করোনা ভাইরাস থেকে রেহাই পাওয়ার বিভিন্ন শিক্ষাও তাঁরা দিচ্ছেন।
Discussion about this post