মহামারী কি শুধুমাত্র বিগত কয়েক শতকেরই ইতিহাস? মানে ওই ২০-২০ এর কথা বলছি আর কি। সম্প্রতি কান পাতলে লোকজনের মুখে মুখে শোনা যাচ্ছে কুড়িতে নাকি যত গন্ডগোল। মোদ্দা কথা হল প্রতি ১০০ বছর অন্তর পৃথিবীতে নাকি এমন একটা করে মহামারী হয়। ওই সময় পৃথিবী নিজেকে পরিশুদ্ধ করে। মানে এখন যেরকম হচ্ছে আর কি। ওজোন স্তর মেরামত হচ্ছে, চারিদিকে দূষণ কমছে, প্রাণীকূল প্রাণভরে অক্সিজেন নিচ্ছে এসব। আবার এসবের সঙ্গে হিসেব মিলিয়ে গুগলও দিয়ে চলেছে নানা ধরনের তথ্য। ১৯২০, ১৮২০, ১৭২০ অর্থাৎ এই বিশেই রয়েছে যতো বিষাক্ত ঘটনা। আর এসবের মধ্যেই একটা প্রশ্ন অনেকের মাথায়ই ঘুরপাক খাচ্ছে, তা হল মহামারী সঙ্গে পরিচয় মানবজাতির ঠিক কবে? সেখানেও কি রয়েছে এই বিশের যোগ?
নাহ! ইতিহাস বলছে এই মহামারী নাকি যিশু খ্রিস্টের থেকেও বয়সে বড়। অর্থাৎ খ্রিস্টের জন্মেরও অনেক বছর আগে জন্ম নিয়েছিল মহামারী। ৪৩০ খ্রিষ্ট পূর্বাব্দে এথেন্মে প্রথম এই মহামারী নামক ভয়ংকর জিনিসটির আবির্ভাব ঘটে। জ্বর, প্রবল তৃষ্ণা, রক্তাক্ত গলা ও জিভ, ত্বক লালচে হয়ে ওঠা ইত্যাদি উপসর্গ নিয়ে প্রভাব বিস্তার করে এই ছােঁয়াচে রোগ। এবং তা ক্রমে লিবিয়া,ইথিওপিয়া ও ইজিপ্ট হয়ে এথেন্স ও স্পার্টাতে ছড়িয়ে পড়ে । যার ফলে মৃত্যু হয় সেখানকার প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ মানুষের মৃত্যু হয়। এমনকি ৪৩৫ থেকে ৪০৫ খ্রিস্ট পূর্বাব্দ পর্যন্ত চলা এথেন্স ও স্পার্টার মধ্যে যুদ্ধের অবসান ঘটে এই মহামারীর প্রভাবে। মহামারীর ফলে বিধ্বস্ত হয়ে পড়ে এথেন্স। যার ফলে খুব সহজেই স্পার্টা জয় লাভ করে।
এরপর ৫৪৬ খ্রিস্টাব্দ সাম্রাজ্য বিস্তার করে জাস্টিনিয়ান প্লেগ নামক এক রোগ। এই রোগের উৎপত্তি ইজিপ্টে। তারপর প্যালেস্তাইন ও বাইজেন্টাইন হয়ে সে ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে নিজের খেলা দেখায়। এরপর পরবর্তী দুই শতাব্দী জুড়ে চলে তার দাপট। বিশ্বের জনসংখ্যার ২৬ শতাংশ অর্থাৎ প্রায় ৫ কোটি মানুষ ইঁদুর বাহিত এই রোগে মারা যায়। আবার অন্যদিকে যদি খ্রিস্টের জন্মের পরের কথা বলি তাহলে বিগত কয়েক শতকের ইতিহাসে ১৭২০ সালে প্লেগ, ১৮২০ সালে কলেরা, ১৯২০ সালে স্প্যানিশ ফ্লু মহামারীর আকার ধারণ করে প্রাণ কেড়েছে কোটি কোটি মানুষের। বর্তমানে ২০২০ তে খেল দেখাচ্ছে করোনা।
Discussion about this post