বিশ্বজুড়ে এখন নোভেল করোনার আতঙ্কের ছায়া। করোনা রুখতে বারবার সাবান দিয়ে হাত ধোয়া ও হ্যান্ডস্যানিটাইজার ব্যবহার করার কথা এখন প্রায় কারুরই অজানা নয়। তবে ইদানীং কিছু অসৎ ব্যবসায়ীর দৌলতে স্যানিটাইজারের দাম প্রায় আকাশছোঁয়া। বাজার থেকে হাওয়া হয়ে গিয়ে কালোবাজারে অনেক বেশি দামে বিকোচ্ছে সেগুলি। ঠিক এমনই বিপন্ন সময়ে কম দামে স্যানিটাইজার বিক্রি করার প্রচেষ্টায় এগিয়ে এল একদল কলেজ পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রী। তারা মূলতঃ বারুইপুর এবং সোনারপুর এলাকার বাসিন্দা। নিজের হাতে হ্যান্ডস্যানিটাইজার বানিয়ে কম দামে জনসাধারণের কাছে পৌঁছে দেওয়ার চ্যালেঞ্জ নিয়েই এগিয়ে চলেছেন তাঁরা।
বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা হু’র নির্ধারিত গাইড লাইন মেনেই তৈরী হচ্ছে হ্যান্ড স্যানিটাইজার। এই উদ্যোগের অন্যতম মুখ প্রদীপ্ত যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্র। তিনি জানালেন, এই উদ্যোগটির মূল অনুপ্রেরণা যাদবপুর ইউনিভার্সিটির ‘এডুকেশন ফর অল’ বলে একটি বিজ্ঞানমনস্ক সংস্থা। ইদানীং স্থানীয় ওষুধের দোকানগুলিতে স্যানিটাইজার ‘আউট অফ স্টক’। কালোবাজারীর ফলে বিপুল আকাশ ছোঁয়া দামে বিকোচ্ছে সেগুলি। এতে সমস্যায় পড়ছেন বহু সাধারণ মানুষ। এছাড়াও স্যানিটাইজার প্রস্তুতির মুখ্য উপকরণ আইসো প্রোপাইল আ্যলকোহল বা ডঃ স্পিরিটও প্রায় দ্বিগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে। এই অবস্থায় আম আদমির কাছে ন্যায্য মূল্যে স্যানিটাইজার পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যেই এই কাজ করে চলেছে তারা। এই প্রচেষ্টায় তাঁকে সঙ্গ দেওয়া অঙ্কিতা, নীলাদ্রী, অর্ণব, চিরদীপ, হৈমন্তিকাদের গলাতেও সেই একই চ্যালেঞ্জের সুর। বাজার চলতি যে কোন চলতি স্যানিটাইজারের চেয়ে অর্ধেক বা তার থেকেও কম দামে বিক্রি করছে তারা।
ফেসবুক ও হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে প্রচুর অর্ডারও আসছে তাদের কাছে। এমনই এক ক্রেতা বারুইপুরের অশোক নস্কর। সুলভ মূল্যে স্যানিটাইজার পেয়ে যথেষ্ট আপ্লুতও তিনি। এই সমগ্র বিষয়টি নিজের হাতে সামলাচ্ছেন যিনি সেই সমাজকর্মী ও স্বপ্নসন্ধানের সম্পাদক সুমিত মন্ডল জানালেন, “এরকম অস্থির পরিস্থিতিই অনেক ইতিবাচক, গঠনমূলক কাজকর্ম করার প্রেরণা যোগায়। তাতে ছাত্রসমাজই এক মুখ্য দায়িত্ব পালন করে। করোনার আঘাতে তেমনই কিছু পরিস্থিতি সামাল দিতে এগিয়ে এসেছে আজকের ছাত্র-ছাত্রীর দল।”
Discussion about this post