ফেব্রুয়ারী মাস মানেই চারিদিকে প্রেমের মরশুম। রোজ ডে, ভ্যালেন্টাইন্স ডে তো আছেই, সঙ্গে ২১ ফেব্রুয়ারী আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। এই দিনগুলোতে ফুল হল এক মুখ্য চরিত্র। প্রায় গোটা মাস জুড়েই ফুলের চাহিদা থাকে একেবারে তুঙ্গে। তাই স্বাভাবিক ভাবেই ফুলের রাজধানী যশোরের গদখালীর ফুল চাষিরাও এখন পার করছেন সবথেকে ব্যস্ত সময়। বাংলাদেশের ফুল চাষের মোট জমির এক-চতুর্থাংশই চাষ হয় এই যশোরে। এই সময়টাকে ঘিরে এখানকার ফুল ব্যবসায়ীদেরও থাকে বিশেষ প্রস্তুতি। শুধু কী তাই! দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে অনেক পাইকারি বিক্রেতারাও এখানে আসেন ফুল কিনতে। সব মিলিয়ে পুরো ফেব্রুয়ারি মাসটাই ফুল চাষীদের কাছে ব্যবসার মরসুম হিসেবেই ধরা হয়।
সারাবছর টুকটাক ফুল বিক্রি হলেও এই সময়টায় গদখালীর ফুলের পাইকারি বাজারের ছবিটা একদম অন্যরকম। শীতের প্রচণ্ড কুয়াশাকে তোয়াক্কা না করেই বেশ ভোর থেকেই ফুলচাষিরা অপেক্ষায় থাকে ক্রেতাদের। সামনে রাখা বিভিন্ন প্রজাতির বাহারি ফুলের ডালি। প্রতি বছরের মত এবছরেও রঙ বেরঙের ফুলে সেজে উঠেছে সেই বাজার। বাজারে যতদূর চোখ যায় শুধু ফুল আর ফুল!গাঁদা থেকে শুরু করে চন্দ্রমল্লিকা, রজনীগন্ধা, কসমস, গোলাপ, গ্ল্যাডিওলাস, জারবেরা, ডালিয়াসহ প্রায় সব রকমেরই ফুলের সমাহার। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে এখন এসব ফুল যাচ্ছে দুবাই, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ও দক্ষিণ কোরিয়া ও আরও নানা জায়গায়।
বিগত দু’বছরে মহামারি করোনা ও ঘূর্ণি ঝড়ের প্রকোপে ভীষণরকম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন এখানকার ফুল চাষিরা। একেবারেই লাভের মুখ দেখেননি তারা। বিশেষত আমদানির প্রকোপে ক্ষেতেই নষ্ট হয়ে গেছিল কোটি কোটি টাকার ফুল। গদখালীর এই ফুল চাষ দেশের শত শত চাষীদের রুটিরুজির উৎস। তাই এবছর কোনোভাবেই বাজার হারাতে চান না তারা। ফেব্রুয়ারি মাসকে ঘিরেই এখন তারা লাভের মুখ দেখার আশায়। গত দুবছরের ব্যাপক ক্ষতি সামান্য হলেও কাটিয়ে উঠতে পারবে, এমনটাই প্রত্যাশা করছে গদখালীর ফুল চাষিরা।
Discussion about this post