জীবন কথার সাথে সংগ্রাম কথাটাই বোধহয় সবচেয়ে ভালো যায়! আর আমাদের চারপাশে এমন জীবন সংগ্রাম আরও বেশি জীবন্ত হয়ে ওঠে। আর আজ কলমে উঠে এসেছে এইরকমই একজন জীবন সংগ্রামীর কথা। কথা হচ্ছে সুন্দরবনের কালিনগর গ্রামের সত্যব্রতর। পেশায় তিনি ফুচকা বিক্রেতা। কিন্তু নেশা? তার নেশার গল্পই জানাতে চলেছি আপনাদের। পেশায় ফুচকা বিক্রেতা সত্যব্রতর নেশা জ্ঞানের দীপ জ্বালিয়ে তোলা। বিনা পারিশ্রমিকে ছাত্র পড়ান তিনি। প্রশ্ন হল একজন ফুচকা বিক্রেতা কী করে ছাত্র পড়াতে পারেন? আসলে আমরা মানুষকে তার পেশা দিয়েই বিচার করেছি এতকাল। তবে এখন সময় এসেছে এ ধারণা ভাঙার। সত্যব্রতর ইচ্ছে ছিল স্কুল শিক্ষক হওয়ার। অঙ্ক নিয়ে স্নাতকোত্তর পাশ করেছেন তিনি। তবে তার আর শিক্ষক হয়ে ওঠা হয়নি।
পরিবার বলতে অসুস্থ বাবা আর বিবাহযোগ্যা দুই বোন। তার বাবা পেশায় চাষি ছিলেন। তবে এখন বয়স বাড়ায় শরীর সহায় নয় একেবারেই। সংসারের হাল ধরার জন্য তাই ফুচকাকে সঙ্গী করেছেন সত্যব্রত। সারাদিন গোটা গ্রামে ঘুরে ঘুরে ফুচকা বিক্রি করেন তিনি। তবে তিনি সারাদিন পর বাড়ি ফিরে ছাত্র ছাত্রীদের পড়ান। এটাই তার একমাত্র নেশা। আর এ নেশার জুড়ি মেলা ভার।
তার স্টুডেন্টদের মধ্যে বেশিরভাগই গরিব ঘরের। কেউ নদীতে মাছ ধরে কেউ বা ভাঁটাতে কাজ করে। তাদেরকে সম্পূর্ণ বিনা পারিশ্রমিকে পড়ান সত্যব্রত। কেউ খাতা বই কিনতে না পারলে তার ব্যবস্থাও করে দেন তিনি। গ্রামের ধনী মানুষদের থেকে সাহায্য তুলে ছেলে মেয়ে গুলোকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন তিনি। প্রত্যন্ত এ গ্রাম যেন স্বর্গ। এ গ্রামে বিদ্যুৎ সংযোগ নেই ঠিকই, তবে সত্যব্রতর মত মানুষেরা ক্রমাগত জ্বালিয়ে চলেছেন শিক্ষার আলো।
Discussion about this post