ছোট থেকেই আমরা শিখে এসেছি মাছ জলে ভাসে, পাখি আকাশে ওড়ে। কিন্তু যদি বলি মাছ’ও উড়তে জানে? কি অবাক হচ্ছেন তো? আজ্ঞে হ্যাঁ! এটা গল্প হলেও সত্যি। বেলোনিফিস বর্গের কর্ডাটা পর্বের এই উড়ুক্কু মাছ বা ফ্লাইং ফিস সমুদ্রের ওপরে ২০০ ফুট উচ্চতা অবধি উড়তে পারে। মূলত ক্যারিবিয়ান দ্বীপরাষ্ট্র বার্বাডোজকেই উড়ুক্কু মাছের দেশ বলা হয়।
এদের বক্ষ পাখনা এবং কোনও কোনও ক্ষেত্রে শ্রেণী পাখনা প্রসারিত হয়ে ডানার মত গঠন লাভ করে। হাওয়ার গতি বা ঢেউয়ের অবস্থানের উপর নির্ভর করে এরা ৩০ সেকেন্ড পর্যন্ত বাতাসে ভেসে থাকতে পারে। তাই আপাতদৃষ্টিতে এই মাছকে দেখে উড়ন্ত মনে হলেও, একে প্রকৃত ওড়া বলা যায়না। এদের এই বাতাসে ভেসে থাকাকে গ্লাইডিং বলা যেতে পারে।
উড়ুক্কু মাছেরা নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছে দীর্ঘদিন ধরে। পাখি ও ডাইনোসরদের আগে থেকেই এ মাছের অস্তিত্ব ছিল পৃথিবীতে। সম্প্রতি চিনের জাদুঘরে থাকা উড়ুক্কু মাছের জীবাশ্ম গবেষণা করে গবেষকেরা বলছেন প্রায় ২৩ থেকে ২৪ কোটি বছর আগের মধ্য ট্রায়াসিক যুগে ‘পোটানিক্সাস কিংজিনসাস’ নামের উড়ুক্কু মাছের প্রজাতির অস্তিত্ব ছিল পৃথিবীতে। এটি জুরাসিক যুগের ডাইনোসরদের থেকেও ৫ কোটি বছর আগের।
তবে আর সব মাছের থেকে আলাদা হলেও ইলিশ, রুই, চিংড়ির মতোই এই মাছ বেজায় সুস্বাদু। বাণিজ্যিকভাবে জাপান, ভিয়েতনাম, বার্বাডোস ও ভারতে খাওয়ার জন্য এ মাছ প্রচুর ধরা হয়। এমন অদ্ভুত মজার মাছও রক্ষা পায়না মানুষের শিকার থেকে। রং-বেরঙের আলোতে এই মাছ আকৃষ্ট হয় আর ছলে বলে আলোর খেলাতেই উড়ুক্কুমাছকে জালে আটকে ফেলা হয়। আর ঠিক তারপরেই ভাসা কিংবা ওড়া সবই খতম। তাদেরও নিয়তি হয় খাবারের প্লেট থেকে মানুষের পেট।
Discussion about this post