জম্বু-কাশ্মীর বলতে প্রথমেই মনে আসে এক ভয়ংকর সৌন্দর্য্যের উপত্যকা। যা ভারতের সৌন্দর্য্যের তাজ রূপে শোভা পাচ্ছে। আবার যাকে ভূ-স্বর্গ বললেও কম বলা হবে না। এমনই সৌন্দর্য্যে ঘেরা কাশ্মীরের অন্যতম আকর্ষণ ডাল লেক। কাশ্মীরে বেড়াতে এসে ডাল লেকে শিকারায় চেপে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য উপভোগ করেন নি এমন মানুষ মেলাই ভার। কিন্তু এই ডাল লেকেই রয়েছে এমন এক জিনিস যা সারা বিশ্ব খুঁজলেও দ্বিতীয়টি পাবেন না।
আমরা ফ্লোটিং মার্কেট দেখেছি, ফ্লোটিং হোটেলও দেখেছি। কিন্তু ডাল লেকে আস্ত এক পোস্ট অফিস রয়েছে যা দীর্ঘ ৯ বছর ধরে টানা লেকের জলে ভাসছে। যাকে দূর থেকে দেখলে আর পাঁচটা সাধারণ শিকারা ভেবে ভুল হতেই পারে। ২০১১ সালে এই শিকারারূপী ডাকঘরটির উদ্বোধন করেন জম্মু-কাশ্মীরের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা। তারপর থেকেই একে একে আনাগোনা শুরু সাধারণ মানুষ থেকে পর্যটকদের। প্রতিবছর পর্যটনের মরসুমে ভিড় উপচে পড়ে এই ডাকঘরে। এখানে রয়েছে একটি ডাকটিকিটের সংগ্রহশালাও, যেখানে পাবেন নানা ধরনের অত্যাধুনিক ডাকটিকিটের বিপুল সমারোহ।
ভাসমান ডাকঘর লাগোয়া রয়েছে বিভিন্ন দোকান-পাট। যেখান থেকে কিনে নিতে পারবেন নানা ধরণের পছন্দের উপহার। শুধু তাই নয় এই ডাকঘর থেকে আন্তর্জাতিক ফোন কল করা যায়, আবার ইন্টারনেট পরিষেবাও রয়েছে । সবচেয়ে মজার ব্যাপার হল ডাল লেকের ছবি দেওয়া এই বিশেষ ডাকটিকিট সংগ্রহ করে রাখার জন্য বিভিন্ন পর্যটক এখান থেকে প্রিয় মানুষের কাছে চিঠি পাঠান। ফলে পর্যটনের মরসুমে বাড়ে কাজের চাপও। সাধারণ মানুষ হোক বা পর্যটক কিংবা পোস্টমাস্টার সবাইকেই শিকারায় চেপে জল পেরিয়ে তবেই এসে পৌঁছতে হয় ডাকঘরে। আবার চিঠিপত্রও জল পেরিয়ে তবেই পৌঁছয় নির্দিষ্ট গন্তব্যে। তাই এমন এক মজার জিনিসের আকর্ষণে দেশ বিদেশ থেকে পর্যটকরা বারবার ছুটে আসেন এই বিখ্যাত ডাকঘরে। সবশেষে একটাই কথা বলার, আপনিও যদি কাশ্মীরে কখনও বেড়াতে আসেন ভুলেও মিস করবেন না যেন বিশ্বের এক এবং অদ্বিতীয় কাশ্মীরের ডাললেক ডাকঘর দর্শন। গোটা বিশ্বের মধ্যে এটি কিন্তু মাত্র একটিই রয়েছে।
Discussion about this post