পৃথিবীর অন্যতম বিশাল অরণ্য ধ্বংস করে চলছে ফ্যাশনেবল ডিজাইনের পোশাক তৈরি। দেশের অন্যতম গভীর অরণ্য নিধন করে চলছে কয়লাখনি খননের কাজ। একশ-দেড়শ বছরের প্রাচীন গাছ উপড়ে ফেলে চলছে কর্পোরেট কোম্পানির মাইনিং। সবুজ থেকে ক্রমে ধূসর হয়ে আসছে। গৃহহারা পশুপাখিরা, বেড়ে চলেছে সারা পৃথিবীর তাপমাত্রা। গলে যাচ্ছে পৃথিবীর বৃহত্তম হিমবাহ, বেড়ে চলেছে সামুদ্রিক জলস্তর। কয়েকবছর বাদেই হয়ত ডুবে যাবে সমুদ্রের কাছাকাছি দেশগুলি, হয়ত বিলুপ্ত হবে সুন্দর পশুপাখির জাত, ধীরে ধীরে হয়ত শেষ হয়ে যাবে পৃথিবীর প্রাণ। কী? একঘেয়ে কচকচানি শুনতে ভালো লাগছে না, তাই তো? কিন্তু এগুলি আর জেনারেল নলেজের বইয়ের পাতার আপ্তবাক্য নয়। বাস্তব।
দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রকৃতি ধ্বংসের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ তো চলছেই। লাদাখে বিজ্ঞানী-পরিবেশকর্মী সোনাম ওয়াংচুক আমৃত্যু অনশনে, ছত্তিশগড়ের হাসদেওতে গাছ কাটার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছেন মানুষ, বাংলার অযোধ্যা পাহাড়ের আদিবাসিরা প্রকৃতি বাঁচানোর পক্ষে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন বহুদিন ধরে- খুঁজলে আরও অসংখ্য উদাহরণ পাওয়া যাবে বিদ্রোহের, প্রতিবাদের। কিন্তু, বৃহত্তর সমাজে, থুড়ি আমাদের তৃতীয় বিশ্বের বাইরে প্রথম বিশ্বের মানুষ কী এ সম্পর্কে ওয়াকিবহাল? জারা আর এইচ এন্ড এম কোম্পানির নাম নিশ্চয়ই সবার জানা। এই কোম্পানির বিরুদ্ধেই অভিযোগ উঠেছে ব্রাজিলের জঙ্গল নিধনের।
স্যাটেলাইট ইমেজ, শিপিং রেকর্ড এবং বিভিন্ন তদন্তের সাপেক্ষে জানা গেছে এই কোম্পানিগুলি জমির জবরদখল, অরণ্য ধ্বংস এবং মানবাধিকার বিরুদ্ধ কাজের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে যুক্ত রয়েছে। ব্রাজিলে উৎপাদিত তুলোর চাহিদা গত দশকে ফ্যাশন দুনিয়ায় অনেক বেড়ে গেছে। অঞ্চলটি বস্ত্রশিল্পের জন্য তুলো চাষ দ্বারা ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হয়েছে। স্থানীয়রা দাবি করছেন তুলো চাষের জন্য কাটা হয়েছে গাছ, জমি দখল করা হয়েছে বেআইনিভাবে। এই এলাকা থেকে প্রতিদিন প্রায় দুই বিলিয়ন লিটার জল উত্তোলন হয়, ছশো মিলিয়ন লিটার কীটনাশক ফেলা হয়। ফলে জমি দূষণ তো হয়ই, সঙ্গে ওই অঞ্চলের জলবায়ুও স্বাভাবিক থাকেনা। তার প্রভাব পরে মানুষের উপরে।
Discussion about this post