উৎসব প্রিয় বাঙালির বাংলা বছরের সর্বশেষ পার্বণ চরক উৎসব। মূলত শিব পূজাকে কেন্দ্র করে পালিত হয় এই উৎসবটি। এই উৎসবের একটি অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ ‘গাজন’। বিভিন্ন জায়গায় এই উৎসব বিভিন্ন নামে পরিচিত। যেমন, মালদহে গাজনের নাম ‘গম্ভীরা’ আবার জলপাইগুড়িতে ‘গমীরা’। চৈত্র মাসের শেষ সপ্তাহে সন্ন্যাসী বা ভক্তরা শিবের গাজন উদযাপন করেন। চৈত্র সংক্রান্তির দিনটিতে চড়ক পূজার সাথেই এই উৎসবের সমাপ্তি ঘটে। চৈত্রমাস ছাড়াও বছরের অন্যসময় শিবের গাজন অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে, তবে তাকে হুজুগে গাজন বলা হয়ে থাকে।
উৎসব প্রিয় বাঙালির বাংলা বছরের সর্বশেষ পার্বণ চরক উৎসব। মূলত শিব পূজাকে কেন্দ্র করে পালিত হয় এই উৎসবটি। এই উৎসবের একটি অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ ‘গাজন’। বিভিন্ন জায়গায় এই উৎসব বিভিন্ন নামে পরিচিত। যেমন, মালদহে গাজনের নাম ‘গম্ভীরা’ আবার জলপাইগুড়িতে ‘গমীরা’। চৈত্র মাসের শেষ সপ্তাহে সন্ন্যাসী বা ভক্তরা শিবের গাজন উদযাপন করেন। চৈত্র সংক্রান্তির দিনটিতে চড়ক পূজার সাথেই এই উৎসবের সমাপ্তি ঘটে। চৈত্রমাস ছাড়াও বছরের অন্যসময় শিবের গাজন অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে, তবে তাকে হুজুগে গাজন বলা হয়ে থাকে।
এক্তেশ্বরের শিবমন্দিরটি আনুমানিক হাজার বছরের প্রাচীন। দ্বারকেশ্বর নদের তীরে অবস্থিত এই মন্দির। সম্পূর্ণ পাথরের তৈরি এই মন্দিরটি বাংলার প্রাচীন স্থাপত্যের এক ব্যাতিক্রমী নিদর্শন। মন্দির অভ্যন্তরে চতুষ্কোণ মার্বেল বাঁধানো মেঝের মাঝখানে কয়েক ধাপ সিঁড়ি নেমে দর্শন মেলে বাবা এক্তেশ্বরের। ফুটদুয়েক লম্বা পাথরের মূর্তিটিকে মানুষ শায়িত শিবজ্ঞানে পুজো করে। এক্তেশ্বর’ মহাদেবের এই মন্দিরকে কেন্দ্র করেই গাজনের সময় এক বিশাল মেলার আয়োজন করা হয়।
সব সম্প্রদায়ের মানুষ এই উৎসবে অংশ নিলেও মূলত হাঁড়ি, বাগদি, ডোম বা আদিবাসীরাই এতে অংশগ্রহণ করেন বেশি। চৈত্র সংক্রান্তির আগের রাত থেকে শুরু হয়ে সংক্রান্তির সকাল পর্যন্ত চলে গাজন উৎসব। গাজনের তিন দিন আগে পাটস্নান নামক একটি প্রথার প্রচলন রয়েছে এখানে। অসংখ্য গজালবিদ্ধ একটি কাঠের পাটা পুজো পায়। গাজনে অংশগ্রহণকারী সন্ন্যাসীদের বলা হয় ভক্তা। জানা যায়, নীল পূজার দিন প্রধান ভক্তাকে লোহার শলাকাবিদ্ধ সেই পাটায় শুইয়ে মন্দিরে আনার প্রথা ছিল একসময়।
স্থানীয়দের মতে, এক সময় এক্তেশ্বর শিবমন্দিরে কাঁটা ঝাঁপ, চড়ক গাছ, বাণ ফোঁড়া সহ বিভিন্ন ভয়ঙ্কর প্রথা পালন করা হত। শিবের খেউড় নামক এক অদ্ভুত প্রথা পালন করা হত এই মন্দিরে। এই প্রথায় সন্ন্যাসীরা ছদ্ম গালিগালাজ করতেন একে অপরকে। তবে সময়ের সাথে বদলেছে সবকিছু। বর্তমানে এই সব প্রথাই বন্ধ হয়ে গেছে। বন্ধ হয়ে গেছে আগুনে ঝাঁপ দেওয়ার মত ভয়াবহ প্রথাও। এই উৎসবকে ঘিরে সরগরম হয়ে ওঠে গোটা অঞ্চল। বাকুড়া সহ পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের বহু দর্শনার্থীরা আসেন এই মেলাতে। উৎসাহ এবং আনন্দের সাথে উদযাপন করা হয় গাজন মেলার। মেলায় স্থানীয় হস্তশিল্পের নিদর্শন এবং চড়কের বিভিন্ন স্টল বসে। গাজনের প্রায় ১৫ দিন আগে থেকে শিবের ভক্তরা জড়ো হতে শুরু করেন এই অঞ্চলে। সন্ন্যাসীদের “হর হর ব্যোম ব্যোম” ধ্বনিতে কেঁপে ওঠে সারা মন্দির চত্বর। শিব আরাধনার গর্জনে মুখরিত হয়ে ওঠে এক্তেশ্বর গাজন মেলা।
Discussion about this post