কথায় বলে, “ঢাল নেই, তলোয়ার নেই নিধিরাম সর্দার”। ঠিক তেমনই আজও মাথা তুলে আছে অম্বিকানগর রাজবাড়ি। এ রাজবাড়ির এক অন্যরকম বৈশিষ্ট্য ছিল। ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে গিয়ে এ বাড়ি ছিল বিপ্লবীদের পাশে। এ বাড়ির ভেতরেই তৈরি হত নানান অস্ত্র। তবে এ বাড়ি আজও বেঁচে আছে তার পুজোর ঐতিহ্য নিয়ে।
এ পুজো শুরু হয় ১৬১১ সালে। সেই থেকে নিয়ম মেনে চলে আসছে এ বাড়ির পুজো। প্রায় ৪০০ বছরের বেশি পুরনো এই পুজো বর্তমানে গোটা বাঁকুড়ার গর্ব। তবে এ গর্ব অনেকটা সোনার পাথর বাটির মত। রাজবাড়ির যত্নের বড় অভাব। তবে শোনা যাচ্ছে, এ বাড়ির সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে। যজ্ঞের অঙ্গারের কাজল ব্যাবহার করে চক্ষু দান করা হয় মাতৃ মূর্তির এবং অন্যান্য প্রতিমার। কারণ এ বাড়ির ইতিহাস বলছে, বাড়িতে কূলদেবী অম্বিকা ও কূলদেবতা কালা চাঁদ জিউ।
কথিত আছে, রাজস্থান থেকে পুরী যাবার পথে এই এলাকাটি ভালো লাগে এক রাজপুতের। সেই থেকে এখানে ওই ধবল পরিবারের বাস। পরে দুই ভাইয়ের মধ্যে ঝামেলা হলে খড়্গেশ্বর ধবল দেও কুমারী নদীর দক্ষিণে থাকা রাজত্ব সরিয়ে নেন। সেখানেই অম্বিকা দেবীর প্রতিষ্ঠা করা হয়। আর তারই নামানুসারে সেই জায়গার নাম হয় অম্বিকানগর। সূর্যাস্ত আইনে অম্বিকানগর রাজ্য নিলাম হয়। সেই সময় এই রাজত্ব কিনে নেয় কলকাতার এক জমিদার।
তবুও বন্ধ হয়নি বিপ্লবীদের কর্মকান্ড। এরপর দেশ স্বাধীন হয়েছে, নতুন সূর্য উঠেছে। কেটে গিয়েছে এতগুলো বছর। অস্তিত্ব বলতে টিকে আছে অম্বিকানগর রাজবাড়ির এই দুর্গা পুজো। মুকুটমণিপুর থেকে সামান্য দূরত্বে এ রাজবাড়ির অবস্থান। জৌলুস কমলেও নিষ্ঠা এখনও একইরকম রয়েছে পুজোর। ক্ষুদিরাম, প্রফুল্ল চাকির মত বিপ্লবীদের অনুভব করতে চাইলে ঘুরে আসতেই পারেন অম্বিকানগর রাজবাড়ি।
Discussion about this post