দুর্গম এলাকায় স্বাস্থ্য পরিষেবার সমস্যা নিয়ে আলোচনা করতে সকলেই এগিয়ে আসেন। তবে সেই সমস্যা এভাবে মেটানোর কথা কেউ ভাবতে পারছেন? কীভাবে? সেটাই হলো আসল গল্প। না, কাল্পনিক কোনো গল্প নয়। এ একেবারে বাস্তব সত্য। অরুণাচল প্রদেশের ছোট্ট এক গ্রাম কামেং। যার চারিদিক ঘেরা পর্বতচূড়া। সেই গ্রামের স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মাঠে লোকজনের ভিড়। কারণ হিসেবে জানা গিয়েছে ড্রোন দেখতে জমছে এ ভিড়।
আসলে এই গ্রামেরই মেয়ে নিখ জ্যাসমিন। সেই উড়িয়ে চলেছে ড্রোন। তবে তা ফটো তোলার জন্য নয়। এ ড্রোন বেশ ভারী আয়তনের পণ্যবাহী ড্রোন। পেশার দিক থেকে নিখ একজন প্যারাগ্লাইডিং পাইলট। আর তার এই ড্রোন পরিষেবাই হয়ে উঠেছে দুর্গম এলাকায় ওষুধ পৌঁছে দেবার সহজ উপায়। উত্তর পূর্ব ভারতের সেভেন সিস্টারস অর্থাৎ সাতটি রাজ্যের যোগাযোগ ব্যবস্থা একেবারেই উন্নত নয়। সে কারণেই মানুষজনকে ওষুধের খোঁজে যেতে হয় মাইলের পর মাইল।
তবে নিখের ড্রোন এনেছে তার সমাধান। গত বেশ কয়েক বছর ধরে ড্রোন চালানোর প্রশিক্ষন নিয়েছেন তিনি। তারপর হাতে পেয়েছেন লাইসেন্স। আইসিএমআর-এর পাইলট প্রোজেক্ট ‘আই-ড্রোন’-এ চাকরির জন্য আবেদন করেছিলেন তিনি। আর সৌভাগ্যবশত সেখানেই জায়গা পাকা হয় তার। বর্তমানে শুধু ওষুধই নয়, তিনি পৌঁছে দিচ্ছেন ইঞ্জেকশন ও অন্যান্য চিকিৎসা সামগ্রী। এর ফলে উপকৃত হচ্ছেন এলাকার স্বাস্থ্যকর্মীরাও।
নিখের এই কর্মসূচি প্রশংসার যথেষ্ট দাবি রাখে। মধ্যবিত্ত পরিবারে বড় হলেও ট্যুরিজম, এয়ারলাইন্স আর হসপিটাল ম্যানেজমেন্টের মত তিনটি বিষয়ে পড়াশোনা করেছেন তিনি। আর পাশাপাশি শিখেছেন প্যারাগ্লাইডিং। দেশ ছাড়িয়ে বিদেশে কাজের সুযোগ পেয়েও রয়ে গেছেন পাহাড় ঘেরা ছোটো গ্রামেই। এ তার বিনয়ের পরিচয় হয়তো! নিজের মাটিকে ভুলে না গিয়ে তার এই কাজ তাই বর্তমানে এলাকাবাসীর কাছে গর্বের।
চিত্র ঋণ – প্রহর ডট ইন
Discussion about this post