মন হারিয়ে যাওয়ার এই বসন্ত নিজেকে মেলে ধরে দোল উৎসবে। আর এ উৎসব নানান জায়গায় চলতে থাকে নানারকম ভাবে। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য শান্তিপুরের দোল উৎসব। শান্তিপুরে পার্বণের শেষ নেই। দুর্গাপুজো, কালীপুজো, রাস থেকে শুরু করে একের পর এক চলতে থাকে। আসলে উৎসবের আয়োজনে এ শহর অভ্যস্ত। রাসের সাথে তুলনা করলে দোল উৎসবও কিছু কম যায় না। জাঁকজমকের দিক থেকে পাল্লা ভারী এ উৎসবের। শান্তিপুরের দোল উৎসব একদিনেই শেষ হয় না। পূর্ণিমার দিন ছাড়াও এর চাকা ঘুরতে থাকে। প্রতিপদ, পঞ্চমদোল, সপ্তম দোল, নবম দোল উৎসব পালিত হয় বিভিন্ন গোস্বামীদের বাড়িতে। তার সঙ্গে বেশ কিছু বারোয়ারি পুজোও দেখা যায়। সেখানে পুজো হয় গোপাল আর রাধাকৃষ্ণের মূর্তি।
চৌগাছাপাড়ার বড় গোপাল আর সোনাপট্টির রাধা কৃষ্ণের মূর্তি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তবে গোপাল তো ঘরে ঘরে পুজো হয়। সে যে ঘরেরই ছেলে। তবে গোস্বামীদের বাড়ির বিগ্রহ বলতে শ্যামচাঁদ, গোকুলচাঁদ, বড়গোস্বামী, মদনগোপাল, পাগলাগোস্বামী, সাহাবাড়ির বিগ্রহ অন্যতম। রাধাকৃষ্ণকে ঘিরে দোলের কদিন জুড়ে চলে ভক্ত সমাগম।
তবে এখানকার দোল উৎসবে প্রধান আকর্ষণ ডালি ধরা। প্রতিপদের দিন রাধাশ্যাম আলোকসজ্জা সঙ্গে নিয়ে বেরিয়ে পড়েন নগর ভ্রমণে। শ্যামচাঁদ গোস্বামী বাড়ি থেকে বিগ্রহ যায় ওড়িয়াবাড়ি সংলগ্ন মাঠে। এখানেই অনুষ্ঠিত হয় ডালি ধরা উৎসব। গোটা উৎসব জুড়ে এর সাথে চলতে থাকে কীর্তন। সমস্ত নগরবাসী এই উৎসব দেখতে ভিড় জমান। বারোয়ারি পুজোর উদ্যোক্তারাও অংশগ্রহণ করেন ডালি ধরা উৎসবে। অন্যদিকে রাত বাড়তে থাকে। তাই অনুষ্ঠান শেষে যে যার ডালি নিয়ে বাড়ি ফিরে যায়। আর মনের মধ্যে করে নিয়ে যায় গোটা উৎসবের অপূর্ব দৃশ্য আর অনুভূতি।
Discussion about this post