একসময় কালীপুজোর রাতে শহর থেকে গ্রাম, মাটির প্রদীপের আলোয় ঝলমল করত প্রতিটি উঠোন। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সেই আলোর জায়গা দখল করেছে রঙিন বৈদ্যুতিক বাতি ও প্লাস্টিকের তৈরি প্রদীপ। প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছে সেই স্বদেশি ঐতিহ্য। অথচ, এই আধুনিকতার ভিড়ে কাটোয়া ১ নম্বর ব্লকের কোশিগ্রামের গড়াইপাড়ায় দেখা গেছে এক অনন্য দৃশ্য। সেখানে নতুন প্রজন্মের হাতে আবারও জ্বলে উঠছে, মোবাইল ফোন নয়, মাটির প্রদীপের আলো।
কালীপুজোকে সামনে রেখে গ্রামের খুদে পড়ুয়ারা নিজেরাই তৈরি করছে মাটির প্রদীপ। গ্রামের কয়েকজন বড় এই উদ্যোগে উৎসাহ দিচ্ছেন ছোটদের। তাঁদের উদ্যোগেই শিশুরা হাতে নিয়েছে মাটি, জল আর স্বপ্নের আলো। নদীর ধার থেকে মাটি সংগ্রহ করে সেই মাটি দিয়ে গড়ে তুলছে নানা আকারের প্রদীপ, শুকিয়ে তাতে দিচ্ছে উজ্জ্বল রঙের প্রলেপ।

উদ্যোক্তারা জানান, স্বদেশি চিন্তাধারা ফিরিয়ে আনা এবং ছোটদের মোবাইল আসক্তি কমিয়ে তাদের শিল্পীসত্ত্বাকে, সৃজনশীলতাকে জাগিয়ে তোলাই তাঁদের লক্ষ্য। খুদেরাও বলছে মোবাইলের বদলে মাটির প্রদীপ বানাতে এখন তাদের বেশ লাগছে। প্রদীপ বিক্রির টাকাটাও তারা ব্যবহার করতে চায় পুজোর কাজেই। স্থানীয় বাজার ও অনলাইনে বিক্রি হচ্ছে তাদের তৈরি প্রদীপ, আর ক্রেতাদেরও সাড়া মিলছে ভালোই।
অভিভাবকরাও বলছেন ছেলেমেয়েরা আনন্দের সঙ্গে এই কাজ করছে দেখে তাঁদের সত্যিই ভালো লাগছে। সত্যিই, গড়াইপাড়ার এই ছোট্ট উদ্যোগ আজ এক বড় বার্তা দিচ্ছে। যেখানে ঐতিহ্য, সৃজনশীলতা ও সামাজিক দায়বদ্ধতা একসঙ্গে মিলেমিশে জ্বেলে দিচ্ছে আশার প্রদীপ।
চিত্রঋণ – সুমিত লাল চৌধুরী
Discussion about this post