মানবিকতা বর্তমানে কিঞ্চিৎ লোকজনের মধ্যেই চোখে পড়ে। তার ওপর করোনা মহামারীর উৎপাতে মানবিকতা যেন হিংস্রতার রূপ ধারণ করেছে! সবাই এখন ‘যে যার সে তার’ মন্ত্রেই বিশ্বাসী। তবে এসবের মধ্যেও কিছু মানুষের ফুটে ওঠা মানবিক দিকটির দৃষ্টান্ত তরুণ প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করছে। তেমনই এক মানবিক দৃষ্টান্তের নজির গড়ল শেওড়াফুলির বর্ণপরিচয়ের সদস্যরা, দোসর শেওড়াফুলি নবারুণ সংঘ ক্লাব। গত ২২শে মে, রবিবার তারা যৌথভাবে এক গ্রীষ্মকালীন রক্তদান শিবিরের আয়োজন করেন। প্রথম প্রচেষ্টাতেই তাদের আয়োজিত এই শিবিরে ৫০ জনেরও বেশি দাতা রক্ত দিয়েছেন। যা এই দুই আয়োজক সংস্থারই কল্পনার অতীত ছিল বলে জানিয়েছেন তারা।
কয়েক বছর আগে শুভঙ্কর পোল্লে নামে শ্রীরামপুরের এক বাসিন্দার উদ্যোগে শেওড়াফুলিতে প্ল্যাটফর্মবাসী গরিব শিশুদের পড়ানোর একটা প্রয়াস শুরু হয়। শেওড়াফুলি স্টেশনে মালগাড়ি থামার প্ল্যাটফর্মেই একদম খুদেদের তিনি পড়ানো শুরু করেন। স্কুলে ভর্তির চেষ্টাও করেছেন অনেককে। তার এই কাজে তিনি পাশে পেয়েছিলেন শেওড়াফুলি শিবতলা প্রাইমারী স্কুলের প্রধান শিক্ষককে। পাশাপাশি বহু তরুণ তরুণী ও সাধারণ মানুষও এগিয়ে এসে শুভঙ্করের পাশে দাঁড়ান। গড়ে ওঠে তাদের ‘বর্ণপরিচয়’। এই মুহূর্তে সেই মাথার ছাদ হয়ে বাচ্চাদের আশ্রয় হয়ে দাঁড়িয়েছে শেওড়াফুলি নবারুণ সঙ্ঘ। জানা গিয়েছে, ‘বর্ণপরিচয়’এর সারাবছরের সুখে দুঃখে পাশে থাকে নবারুণ সঙ্ঘ।
সেদিনের সেই খুদেরাই এখন কেউ কিশোর অথবা কেউ তরুণ। পড়াশোনার পাশাপাশি নানা সমাজসেবামূলক কাজেও এগিয়ে যায় তারা। বড়রাও তাই প্রবল উৎসাহে তাদের ডাককে উপেক্ষা করতে না পেরে রবিবারের সেই শিবিরে উপস্থিত থেকেছেন। দুই আয়োজক সংস্থাই আপ্লুত সে সমস্ত সহৃদয় ব্যক্তিদের পাশে পেয়ে, যারা প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে পাশে থেকে সাহায্য করলেন।
Discussion about this post