রোজগারের একঘেয়ে কাজের মধ্যে থেকে কয়েকদিনের ছুটি পেলেই আজকাল অহরহই মানুষ ছুটছে বিভিন্ন হোটেল-রিসোর্ট কিংবা প্রকৃতির টানে। এবার আর পাহাড়, ঝরনা বা সমুদ্র দেখতে দেখতে ক্লান্ত লাগলেও চিন্তা নেই! গোলাকার এই পৃথিবীর গণ্ডির বাইরের হোটেলে ঘোরার সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে আপনার জন্য। হোটেল তাও আবার পৃথিবীর বুকে নয় একেবারে মহাকাশে!! ভাবছেন এও কি সম্ভব? হ্যাঁ, এমনই এক অভিনব পরিকল্পনা করেই বিচারকদের তাক লাগিয়েছেন কলকাতার মেয়ে এলাহি গুপ্ত। নিউটাউনের চৈতন্য টেকনো স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী সে।
মহাকাশে কীভাবে হোটেল করা সম্ভব? সেই নিয়েই একটি রিপোর্ট তৈরি করে মার্কিন মুলুকের ন্যাশনাল স্পেস সোসাইটিতে পাঠিয়েছিল বাংলার মেয়ে এলাহি গুপ্ত। তার মস্তিষ্কপ্রসূত এই রিপোর্টটিই নজর কেড়েছে বিচারকদের। সেরা হিসেবে সম্মানিত ও হয়েছে এটি। এলাহির পরিকল্পনায়, এই হোটেলটির ঠিকানা কোন গ্রহ একেবারেই নয়। পৃথিবী ও মহাশূন্যের মধ্যবর্তী কারম্যান লাইন অতিক্রম করে হোটেলটি ভেসে থাকবে মহাশূন্যে। পৃথিবী থেকে এই হোটেলে পাড়ি দিতে হলে যাত্রীদের যাতে বেশি পথ পেরোতে না হয় তাই এই ভাবনা গুণী ছাত্রীর। কার্বন ন্যানো টিউব, কেলভার ফাইবার ও সিসা গ্লাস দিয়ে নির্মিত এই হোটেলটির প্রকৃতির সমস্ত শক্তিকে ঠেকানোর ক্ষমতা থাকবে বলে জানিয়েছে এলাহি।
২০১৮ সালে এই ‘স্পেস সেটেলমেন্ট কনটেস্ট’ টি আয়োজন করেছিল মার্কিন সংস্থা নাসা ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণীর পড়ুয়াদের জন্য। তবে তারপর থেকে প্রতি বছর এই প্রতিযোগিতার দায়িত্ব নেয় ন্যাশনাল স্পেস সোসাইটি। এই বছরে বিশ্বের ২২টি দেশ থেকে ১৭ হাজার পড়ুয়া অংশ নিয়েছিল। আর সেই প্রতিযোগিতাতেই তার বয়সী পড়ুয়াদের নিয়ে তৈরি গ্রুপে সকলের মধ্যে থেকে পুরস্কার জিতে নিল কলকাতার এলাহি। তার এই ভাবনাকে রূপ দিতে সাহায্য করেছিলেন তারই স্কুলের এক শিক্ষক। মজার বিষয়, তার পরিকল্পিত এই হোটেলটিতে আপনি চাইলে আপনার পোষ্যকেও নিয়ে যেতে পারেন। সে নিজের স্বপ্নের এই হোটেলের নাম ভেবেছে সর্বপ্রথম মহাকাশযাত্রী প্রাণীর নামানুসারে ‘লাইকা’। তাই এবার না হয় মনোরঞ্জনের পরিকল্পনা হোক পৃথিবীর বাইরে। তবে স্বাভাবিকভাবে মহাকাশে যেতে হলে বড় অংকের অর্থ তো খরচ হবেই। আপাতত: মহাকাশ ভ্রমণের প্রস্তুতি তো নেওয়াই যায়!
Discussion about this post