কৃষ্ণনগর মানেই হল রাধাকৃষ্ণের চারণভূমি। তাই এখানের অলিগলিতে শোনা যায় হরি নামের ধ্বনি। আর এই জায়গাটিকে বাংলার অন্যতম পূণ্যভূমিতে রূপান্তরিত করেছেন মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্র। তাঁর হাত ধরে যে কত মেলা মন্দিরের পত্তন ঘটেছে এই কৃষ্ণনগরে হিসেব করা দায়। তেমনই এক অজানা মেলার কথা বলতে চলেছি। যার ইতিহাস বাংলার গৌরবময় ঐতিহ্যের অংশই বলা যায়।
‘বারোদোল’ নামের ব্যাখ্যাটা অনেকে অনেকরকম ভাবে দিয়ে থাকেন। কেউ বলেন দোল পূর্ণিমার পর ১২ দিনের মাথায় এই মেলা হয় তাই বারো দোল। আবার অনেকে বলেন ১২টি কৃষ্ণ বিগ্রহ বিভিন্ন স্থান থেকে আনা হয়েছে তাই এমন নামকরণ। তা নামের কারণ যাই হোক না কেন উৎসব বেশ জমকালো গোছের। ১২টি কৃষ্ণ মূর্তিকে সুন্দর শাঁখের নকশা করা ঠাকুর দালানে ও নাটমন্দিরে রেখে প্রথম তিন দিন পুজো করা হয়। এমনকি ওই তিনদিন বিগ্রহের সাজসজ্জাও তিন রকম হয়ে থাকে। রাজ বেশ, ফুল বেশ এবং রাখাল বেশ।
২০১৯ সালের পর রাজবাড়ির অন্দরমহলের মা অন্নপূর্ণার চরণ, শিবলিঙ্গ, জয়লক্ষ্মী, বিজয়লক্ষ্মীকে এই নাটমন্দিরে প্রতিষ্ঠিত করা হয়। বারোদোল মেলায় আজও সার্কাস এবং মরণ কূপ বসে। এসব সচরাচর আর কোন মেলাতে আর দেখতে পাওয়া যায় না। মেলার আকার আয়তন এতই বড় যে তিন ভাগ রয়েছে এর। প্রথম ও তৃতীয় অংশে বিভিন্ন রকমারি জিনিসের দোকান ও মুখরোচক খাবারের দোকান। মেলার ঠিক মাঝখানে থাকে বিভিন্ন দোলনা ও খেলাধুলার জিনিস। কৃষ্ণনগর ও আশপাশ অঞ্চলের সাথে পাল্লা দিয়ে বহুদূর থেকেও আসেন বিক্রেতারা তাঁদের বিখ্যাত সামগ্রী নিয়ে। তাই দোলপূর্ণিমার একাদশীতে সময় নিয়ে চলে আসুন কৃষ্ণনগর রাজবাড়ির মাঠে। একমাস ব্যাপী চলা এই মেলায় একবার পা রাখলে ভক্তির সাথে ভালোবাসাটাও উপভোগ করবেন।
Discussion about this post