আভিজাত্যে মোড়া পৃথিবীতে সবাই অসুস্থ, মনের অসুখে। কেউ কম, কেউ বা বেশি। মন খারাপের সবচেয়ে ভাল ওষুধ গান। আমাদের আবেগ অনুভূতির ছন্দ মিশে থাকে প্রিয় গানের সুরে। সমাজে মানুষের মধ্যে এই বিনামূল্যের ওষুধ ক্রমাগত ছড়িয়ে চলেছেন দুই বাংলার বহু স্বনামধন্য ব্যান্ড। তাদের মধ্যে এপার বাংলার উল্লেখযোগ্য দোহার, মহীনের ঘোড়াগুলি, ভূমি, ফসিলস, কালপুরুষ, উজান, চন্দ্রবিন্দু। ওপারের ব্যান্ডগুলি হল আর্টসেল, ওয়ারফেজ, শিরোনামহীন, মাইল্স্, নগর বাউল, সোল্স, অ্যাশেস বাংলাদেশ, অর্থহীন, ব্ল্যাক। সম্প্রতি তাদের এই কাজকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তাদের লোগো ও নাম ছাদের দেওয়ালে আঁকলেন রূপনারায়ণপুরের অয়ন দত্ত।
এই অল্প বয়সেই অয়ন বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী। অয়ন আসানসোলের বি.বি কলেজের জুওলজি অনার্সের ছাত্র। কোনো নামী শিল্পী নয়, ছোটবেলায় মায়ের হাত ধরেই অয়নের আঁকা শেখা শুরু। ছোট ছোট শিল্পকর্মের মাধ্যমে তার দক্ষতা প্রকাশ পেলেও বড়ো কোন চিত্র আঁকার স্বপ্ন অধরাই থেকে যাচ্ছিল অয়নের। কিন্তু কলেজে পড়াকালীন বিবি কলেজের অনুষ্ঠানে হঠাৎ করেই ওয়াল পেইন্টিং করার সুযোগ আসে অয়নের। তারপর আর ফিরে তাকাতে হয়নি। তার ছবিতে মুগ্ধ হয়ে যায় সকলে। বর্তমানে বিভিন্ন রকমের ওয়াল পেইন্টিং-এর কাজ করে থাকে সে। রূপনারায়ণপুর সহ আশেপাশের অঞ্চলগুলিতে ছড়িয়ে আছে অয়নের এই অসাধারণ শিল্প প্রতিভা।
ছোট থেকেই অয়নের বাংলা এবং ইংলিশ ব্যান্ড সঙ্গীতের প্রতি অত্যন্ত আগ্রহ ছিল। ছোটবেলাতে বাড়িতে টেপ রেকর্ডারে ভূমি, চন্দ্রবিন্দু শুনে তার ব্যান্ডের প্রতি ভালবাসার সূত্রপাত। তারপর বড়ো হয়ে পরবর্তীকালে ফসিলস, মহীনের ঘোড়াগুলি, বাংলাদেশের শিরোনামহীন, ব্ল্যাক ইত্যাদি ব্যান্ডের সঙ্গীতের উপর তার প্রবল আগ্রহ জন্মায়। তার ছাদের দেওয়ালে আঁকা ছবিতে স্থান পেয়েছে দুই বাংলার বহু ব্যান্ড। তাদের মধ্যে আছে মহিনের ঘোড়াগুলি, দলছুট, ফকিরা, লক্ষ্মীছাড়া, কালপুরুষ প্রভৃতি।
অয়নের মতে,”দুই দেশ আলাদা হলেও শিল্প, সঙ্গীত, ভাষার দ্বারা অনেকভাবেই এক আমরা। শিল্প সাহিত্য সংস্কৃতি এই সকল বিষয়ই কাঁটাতারের শত বিভেদ থাকা সত্বেও মানুষকে এক করে রাখে। এই ভাবনা থেকেই আঁকাটির বাড়ির ছাদের দেয়ালে করবার সূত্রপাত। প্রচুর ভালো ভালো গান বানানো সত্বেও কিছু বাংলা ব্যান্ড আজও অত্যন্ত আন্ডাররেটেড, এই কারণেই যথা সম্ভব আমার পছন্দের সবরকম ব্যান্ড এর নাম আঁকাটিতে রাখা হয়েছে।”
Discussion about this post