রূপে নয় গুণে পরিচিতি। অর্ধ অঙ্গেই স্বয়ংসম্পূর্ণা তিনি। ছোট থেকেই বিকলাঙ্গ এই নারীর নাম এবার গিনেস বুকে। জন্ম থেকেই দুটি হাত নেই তার। পা দিয়েই চালিয়ে যান বিমান চালানোর মত কাজ। তাছাড়াও তিনি পিয়ানোতেও সুর তোলেন তার পায়ের সাহায্যেই। জীবনযুদ্ধে বারবার তিনি জিতে চলেছেন আত্মবিশ্বাসকে দোসর করে। আমেরিকান তাইকন্ডো অ্যাসোসিয়েশনের প্রথম আর্মলেস ব্ল্যাক বেল্টধারী এই নারী হলেন জেসিকা। মাত্র তিন বছর বয়স থেকেই শুরু করেন নাচ এবং শরীরচর্চা। ৫ বছর বয়সে সাঁতার কাটতে শেখেন তিনি। আর ১০ বছর থেকে তাইকন্ডোও শিখতে শুরু করেন। শারীরিক প্রতিকূলতাকে ফু দিয়ে উড়িয়ে দেওয়ার জ্বলন্ত উদাহরণ জেসিকা। জীবনের কোনো কাজেই থেমে যাননি জেসিকা। ইচ্ছে অনুযায়ী সব কাজ করেছেন স্বাভাবিকভাবে।
তাইকন্ডো শিক্ষক প্যাট্রিকের সঙ্গে ২০১০ সালে প্রেম হয় তার। পরবর্তীতে প্যাট্রিকের সঙ্গেই বিয়ে হয় জেসিকার। প্যাট্রিককে তাদের সম্পর্কের বিষয়ে বলতে শোনা যায়, ‘অনেকেই হয়তো ভালো চোখে দেখেননি, আমি জেসিকার সঙ্গে প্রেম করেছি বা তাকে বিয়ে করেছি। তবে আমি জেসিকাকে তার আত্মবিশ্বাসের কারণে শ্রদ্ধা করি। আজীবন তার পাশে থাকার জন্যই তাকে বিয়ে করেছি।’ অন্যদিকে ২০০৮ সালে বিশ্বের প্রথম আর্মলেস লাইসেন্সধারী পাইলট হন জেসিকা। তার এই প্রতিভার জন্যই আজ তার নাম গিনেস বুকের পাতায়। এরপর টানা তিন বছর তিনি মোট ৮০ ঘন্টা বিমান চালিয়েছেন।
৩৯ বছর বয়সী এই নারী পা দিয়ে বিমান চালাতে রীতিমতো দক্ষ। শুধুমাত্র জীবিকা নয়, নিজের প্রয়োজনীয় সমস্ত কাজ নিজেই করেন তিনি। জীবনে চলার পাশাপাশি এ দম্পতি বিকলাঙ্গ মানুষদের কাউন্সেলিং করান। উদ্দেশ্য যাতে বিকলাঙ্গ মানুষরা নিজেদের বোঝা না ভেবে সমাজে মাথা উঁচু করে বাঁচতে পারেন। জেসিকা আরও বলেন, “আমার মতো যাদের হাত নেই; তাদের জন্য কাজ করছি। এমনকি আমার নিজের সন্তানও যদি হাত-পা ছাড়া জন্মগ্রহণ করে, তবুও আমি তাকে সাদরে গ্রহণ করব।” সব থেকেও যারা হাল ছেড়ে দেয় তাদের কাছে জীবনকে ফিরে দেখার চূড়ান্ত উদাহরণ হয়ে আজীবন রয়ে যাবেন জেসিকা।
চিত্র ঋণ – https://worldkings.org/
Discussion about this post