জার্মানির বার্লিন শহরে আয়োজিত হয়েছে তীরন্দাজির বিশ্বকাপ। প্রথম থেকেই তীরন্দাজিতে ভারতের বেনজির সাফল্য চোখে পড়েছে। অনূর্ধ্ব-১৮ বিভাগে যোগ্যতা অর্জন পর্বে রেকর্ড গড়েছিলেন অদিতি গোপীচাঁদ স্বামী। আমেরিকার লিকো অ্যারিয়োলাকে ছ’পয়েন্টে হারিয়ে ৭২০ পয়েন্টের মধ্যে ৭১১ পেয়েছিলেন অদিতি। লিকো অ্যারিওলার রেকর্ড অদিতি ভেঙে দিয়েছিলেন। এরপর গত সপ্তাহে বার্লিনে মেয়েদের দলগত ফাইনালে মেক্সিকোকে হারিয়ে ইতিহাস রচনা করেছে ভারতের তিন কন্যা। তার মধ্যেও ছিলেন অদিতি। তাঁর সঙ্গে ছিলেন জ্যোতি সুরেখা ভেন্নাম ও প্রণীত কৌর। তীরন্দাজির বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে দলগত প্রতিযোগিতায় এর আগে ভারতের মহিলা দল কখনও সোনা জিততে পারেনি।
এবার ১৭ বছর বয়সে ইতিহাস গড়লেন অদিতি গোপীচাঁদ স্বামী। তিরন্দাজিতে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হলেন। অদিতিই ভারতের প্রথম বিশ্বচ্যাম্পিয়ন। শুধু ভারত নয়, সারা পৃথিবীর তিরন্দাজির বিশ্বকাপের ইতিহাসে অদিতিই কনিষ্ঠতম বিশ্বচ্যাম্পিয়ন। ফাইনালে তিনি হারিয়েছেন মেক্সিকোর আন্দ্রেয়া বেকেরাকে। জিতেছেন ১৪৯-১৪৭ ব্যবধানে। প্রসঙ্গত গত মাসে যুব বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপেও সোনা জিতেছেন অদিতি। ভারতের চতুর্থ মেয়ে হিসেবে তিনি এই সোনা অর্জন করেছিলেন।
মাত্র ১১ বছর বয়সে তীরন্দাজি শুরু করেছিলেন অদিতি। অদিতির বাবা গোপীচাঁদ খেলাধুলার অত্যন্ত অনুরাগী এবং তিনি বরাবর চাইতেন তাঁর মেয়ে যেকোনো একটি খেলার সঙ্গে যুক্ত থাকুক। গোপীচাঁদ মহারাষ্ট্রের সাতারা শহরের সরকারি স্কুলের অঙ্কের শিক্ষক। অদিতির তীরন্দাজি শেখার সুবিধের জন্য তার পরিবার নিজেদের গ্রাম থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরের সাতারা শহরে এসেছিল। সেখানেই অদিতি একটি ছোট্ট প্রশিক্ষণকেন্দ্রে ট্রেনিং নিয়েছেন। অদিতির প্রশিক্ষণের জন্য, বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ বা যাতায়াতের খরচের জন্য তাঁর বাবাকে ধার করতে হয়েছিল বেশ কিছু পরিমাণ টাকা। কিন্তু গোপীচাঁদ বিশ্বাস রেখেছিলেন মেয়ের প্রতি। এ বছরেই প্রথম সিনিওর লেভেলের প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণ করলেন অদিতি। আর প্রথমবারেই তাঁর বাজিমাত। দলগত প্রতিযোগিতার সঙ্গে সঙ্গে ব্যক্তিগত প্রতিযোগিতাতেও চ্যাম্পিয়ন তিনি।
এছাড়া, মেয়েদের বিভাগের পর ছেলেদের কম্পাউন্ড বিভাগেও বিশ্বজয়ী পেয়েছে ভারত। পুরুষদের বিভাগে প্রথম বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন ওজাস দেওতালে। পোল্যান্ডের লুকাস প্রিবিলিস্কিকে হারিয়েছেন তিনি।
চিত্র ঋণ – https://www.worldarchery.sport/
Discussion about this post