হয়ে গেল ইউরো কাপ, হয়ে গেল কোপা আমেরিকা। সারা বিশ্ব দেখছে ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোকে, অথবা লিওনেল মেসিকে। দেখছে দেশ-বিদেশের অসংখ্য ঝাঁক ঝাঁক নতুন খেলোয়াড়দের। বিশ্ব দেখেছে আমাদের দেশের জাতীয় ফুটবল দলের উত্থান পতনও। দেখেছে সুনীল ছেত্রীকে। তাঁদের ক্ষমতা, যোগ্যতা, সুযোগ সুবিধা সবই ভীষণ দৃশ্যমান, খুব স্বাভাবিক। কিন্তু, এসব কিছুই দেখেননি বাঁকুড়ার ভারতী মুর্মু, কারণ তাঁর সামর্থ্য নেই। তিনি রাজ্যের মহিলা ফুটবল দলের অধিনায়ক। তাঁর প্রিয় ফুটবলার ওডিশার সাধু মান্ডি।
বাঁকুড়া জেলার বিষ্ণুপুর থানার বাঁকাদহ কামারপাড়ার আদিবাসী তরুণী ভারতী। এবছর তিনি বাংলার মেয়েদের অনূর্ধ্ব ১৯-এর অধিনায়ক ছিলেন। পাঞ্জাবে দেশের সমস্ত রাজ্যের দলের বিরুদ্ধে তাঁর অধিনায়কত্বেই খেলে ফাইনালে উঠেছিল বাংলা। এই ভারতীই মাত্র দুই বছরের অনুশীলনে নির্বাচিত হয়েছেন বাংলার হয়ে জাতীয় স্তরের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য। করছেন রাজ্যের প্রতিনিধিত্ব।
ভারতীর বাবা মা দুজনেই খেতমজুর। ছোটবেলায় পাড়ার ছেলেদের ফুটবল খেলা দেখে তাঁর নিজের খেলার ইচ্ছে জেগেছিল। তখন থেকেই মায়ের পুরনো শাড়ি, ছেঁড়া ন্যাকড়া জড়িয়ে বল বানিয়ে পেটাতেন ভারতী। পাড়া প্রতিবেশীরা বাড়ি এসে বলে যেত সংসারের কাজে মন দিতে, যেতে তো হবে সেই শ্বশুরবাড়িতেই। শুধু পাশে ছিলেন বাবা মা। আজ গোটা অবিশ্বাসী সমাজকে পিছনে ফেলে এগিয়ে চলেছেন ভারতী। তাঁর স্বপ্ন এখন আরও অনেক বড়। প্র্যাক্টিসের পাশাপাশি স্কুলের পড়াশোনাও তাঁর চলছে। তিনি বিশ্বাস করেন, “বল যার পায়ে, মাঠ তার কথা শুনতে বাধ্য।”
Discussion about this post