শীত এবার পাততাড়ি গোটালো বলে! বসন্তের হাওয়া সেভাবে অনুভব করা না গেলেও তা আসতে খুব বেশি দেরি নেই। আর বসন্ত মানেই তো আরেক উৎসব। সঙ্গে ভ্রমণপ্রিয় বাঙালির ঘুরতে যাওয়ারও মোক্ষম সুযোগ। এই সময় মিঠে রোদ গায়ে মেখে উপভোগ করার এক উপযুক্ত জায়গা হল সমুদ্র।দিঘা বা পুরীর কাছাকাছি নানান অফবিট সমুদ্র সৈকতের সন্ধান ইতিমধ্যেই মানুষের মুঠোফোনে। তাই ধীরে ধীরে জায়গাগুলো জনবহুল হয়ে উঠছেও বটে। কিন্তু শহুরে কোলাহল থেকে বেশ অনেক হাত দূরে দু একদিন কাটাতে চাইলে আদর্শ ঠিকানা হতেই পারে বাঁকিপুট সমুদ্র সৈকত। যাওয়ার সেরা সময় হল অক্টোবর থেকে মার্চ মাস, দিঘা থেকে মাত্র ৫০ কিমি দূরত্বে অবস্থিত নির্জন এক সৈকত।
পূর্ব মেদিনীপুরে অবস্থিত এই সৈকতটি জুনপুট সৈকতের খুব কাছেই। বলা যেতে পারে বঙ্গোপসাগরের সবচেয়ে নিরিবিলি সৈকত এটি। নির্জন এই সমুদ্রতটে ছেয়ে থাকা বাহারি লাল কাঁকড়ার সৌন্দর্য্য সত্যিই অসাধারণ। মোহনায় অবস্থিত বলে সমুদ্রকে হয়তো সবসময় পাওয়া যায় না। কিন্তু জোয়ার এলে আলাদা এক রূপ। এছাড়া বিস্তৃত বেলাভূমি, ঝাউবন এসব তো রয়েইছে। সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের দৃশ্যও একবার দেখলে তা ভোলার নয়।
এসব ছাড়াও বাঁকিপুটে রয়েছে প্রাচীন বাতিঘর বা লাইট হাউস। বাঁকিপুট থেকে কিছুটা দূরে হাঁটলেই দেখতে পাবেন ব্রিটিশ আমলে তৈরি দরিয়াপুরের বাতিঘর। যার উচ্চতা প্রায় ৯৬ ফুট। বিকেলে সেই বাতিঘরে উঠে আপনি উপভোগ করতে পারবেন বাঁকিপুটের সৌন্দর্য। এছাড়া বাঁকিপুটের আরেকটি আকর্ষণ হল বঙ্কিমচন্দ্রের স্মৃতি বিজড়িত কপালকুন্ডলা মন্দির। তাঁর বিখ্যাত উপন্যাস ‘কপালকুণ্ডলা’য় তিনি এই মন্দিরটিরই উল্লেখ করেছেন। মাত্র ৫ কিমি দূরে অবস্থিত ঐতিহাসিক এই নিদর্শন। এছাড়া যেতে পারেন মোহনায়, রসুলপুর নদী যেখানে বঙ্গোপসাগরে মিশছে। আর পেটুয়াঘাটের মৎস্য বন্দর।
দু, দিন থাকলেই মন প্রাণ ভরে উপভোগ করতে পারবেন বাঁকিপুটের অসাধারণ সব দেখার জায়গাগুলো। যাওয়াও বেশ সহজ। কলকাতা থেকে ট্রেনে গেলে কাঁথি স্টেশন থেকে অটো বা রিকশা ধরে পৌঁছে যাওয়া যায়। গাড়িতে গেলে কলকাতা থেকে ৪ নং জাতীয় সড়ক ধরে দিঘা, কাঁথি পেরিয়ে বাঁকিপুট। কাঁথি থেকে দূরত্ব মাত্র ১৩ কিমি। থাকার জায়গা বলতে একমাত্র বাঁকিপুট রিসোর্ট। আগে থেকে বুক করে গেলেই ভালো। দিঘা থেকেও অবশ্য ঘুরে আসা যায়, অবশ্যই যদি একদিন ঘোরার প্ল্যান করেন।
Discussion about this post