ধরুন আপনার পাশের বাড়ির কেউ করোনায় আক্রান্ত। কী করবেন আপনি? স্বাভাবিকভাবেই তার আশেপাশে যাবেন না। সাহায্য দূরে থাক, মাথায় তখন একটাই কথা ঘুরবে। “আপনি বাঁচলে বাপের নাম”। কী তাই তো? কিন্তু আপনার বাড়ির মধ্যেই যদি রোগ বাসা বাঁধে পারবেন তো চোখ উল্টে বসে থাকতে? আর রোগী যদি হয় আপনারই সন্তান? তখন হয়ত আপ্রাণ চেষ্টা চলবে তাকে সুস্থ করে বাড়ি ফেরানোর। প্রতিবেশী থেকে আত্মীয় দশ হাত দূরে সরলেও আপনি তা পারবেন না। ২০২০ সালে ঘটে যাওয়া তেমনই এক ঘটনা আপনাদের চোখের সামনে তুলে ধরতে চলেছি।
ছেলে রোগে আক্রান্ত। ঢাকা মেডিকেল থেকে রোগীকে কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন ডাক্তার। স্বভাবতই ঢাকা হাসপাতাল থেকে ডিসচার্জ করিয়ে ছেলেটিকে অ্যাম্বুলেন্সে তুলতে হবে। আর সেখানেই দেখা দিল বিপদ। আক্রান্ত হওয়ার ভয়ে রোগীকে বেড থেকে স্ট্রেচারে তোলার জন্য এগিয়ে এলো না কোনো নার্স কিংবা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। অসুস্থ ছেলেটির সঙ্গী ছিলেন তাঁর বাবা। আর বাবা মানেই যে বটবৃক্ষের মতো এক নির্ভরতা যাকে আঁকড়ে সন্তান নিরাপদ থাকে চিরকাল। এখানেও তার অন্যথা হল না। অসহায় ছেলেকে কোলে তুলে নিলেন বাবা। আর বলে উঠলেন,”আরে বেটা ভয় কিসের! এই দেশ মইরা গেছে, কিন্তু তর বাপ এখনো বাঁইচা আছে!” কোলে করে তুলেই অ্যাম্বুলেন্সে তুললেন ছেলেকে।
সময় যতই খারাপ হোক না কেন সন্তানের পাশ থেকে তারা বাবা মায়ের সান্নিধ্য হয়ত কখনো ছাড়া যায় না। স্নেহের পরশে লালন হয় প্রত্যেক সন্তান তার মা-বাবার কাছে। শহর সুস্থ হোক, সেরে উঠুক পৃথিবী। মহামারীর আতঙ্ক মুছে আবার বসন্ত আসুক বিশ্ব জুড়ে।
Discussion about this post