শিলিগুড়ি থেকে আলিপুর দুয়ার ১৬৮ কিলোমিটার। যেন এক স্বপ্নের রেলযাত্রা। একদিকে পাহাড়কে রেখে জঙ্গল আর চা বাগানের মধ্যে দিয়ে চলছে ট্রেন। তিন তিনটে বড় বড় ন্যাশনাল পার্কের একেবারে ভেতর দিয়ে চলে যাচ্ছে এই রেল। দুরন্ত গতিতে ছুটে চলে যায় ট্রেনগুলো তীব্র হুইসেল বাজিয়ে, দশ দিক কাঁপিয়ে। আসলে এটা একটা খুনি রেললাইন। এর প্রতি চাকায় রক্তের দাগ। এখনো পর্যন্ত ২৫০ টিরও বেশি হাতি, বাইসন, লেপার্ড, হরিণ আরও কত ছোট প্রাণীকে পিষে দিয়ে চলে গেছে ট্রেন। আর সেই রেল লাইনের হাতেই গত মঙ্গলবার রাতে ফের খুন হল এক প্রাপ্ত বয়স্ক চিতাবাঘ।
ঘটনাটি ঘটেছে নেওরা নদী রেলব্রিজ এলাকায়। স্থানীয় সূত্রের খবর রাতের অন্ধকারে চিতা বাঘটি রেল সেতু পেরচ্ছিল। তখনই চালসা থেকে মালবাজারগামী ট্রেনের ধাক্কায় তার মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন বন্যপ্রাণ স্কোয়াডের কর্মীরা। তারাই প্রাণহীন চিতার দেহটি উদ্ধার করেন। মাল বন্যপ্রাণ স্কোয়াডের রেঞ্জার দীপেন সুব্বা বলেন, সম্ভবতঃ ট্রেনের ধাক্কাতেই চিতাবাঘটি মারা গিয়েছে। ময়না তদন্তের পরেই মৃত্যুর আসল কারণ পরিষ্কার হবে।
রেল কর্তৃপক্ষের তরফে আগেই জানানো হয়েছিল যে, লাইন বরাবর বেড়া দেওয়া হবে। কাজ এগোয়নি এক চুলও। স্বভাবতই প্রশ্ন উঠছে এভাবে আর কতদিন রেলের বলি হবে এই বন্যপ্রাণেরা? আমাদের স্বাচ্ছন্দ্য আর ভালো থাকার মাশুল কি এভাবেই বুনবে ডুয়ার্সের চিতা, গন্ডার, হাতিরা?
Discussion about this post