ওদের আলাদা করে ভালোবাসা বোঝাতে হয়না। আলাদা করে বলতে হয়না ‘ভালোবাসি’। ওদের শুধুই পাশে গিয়ে একটু চুপটি করে দাঁড়ান। গায়ে ঘেঁষে ওরাও এগিয়ে আসবে। ঠিক ধরেছেন। রাস্তায় দিন দু’বেলা হাঁটতে গেলে অযাচিতভাবে যাদের মুখ দর্শন হয় তাদের কথাই বলছি। রাস্তার কুকুর। যারা আমার আপনার পায়ে পায়ে জড়ায় একটুকরো খাবারের আশায়। কখনো কখনো ছোঁড়া খাবার তো পায় ওরা। কিন্তু চিকিৎসা তার কি হবে? বমি করলে কিংবা কোথাও গভীর ক্ষত হলে কিংবা জিভ বের করে হাঁপালে? কখনো বা অসুখে নেতিয়ে শুয়ে। এই অসুস্থ কুকুরদের দায়িত্বটাই এখন তুলে নিয়েছে ‘লিটল পজ গ্রুপ’।
লকডাউনের মাঝে মানুষ তখন নিজের শরীর স্বাস্থ্য নিয়ে বেশ সতর্ক হয়ে উঠেছে। ঠিক সেইসময় রাস্তার কুকুরদের স্বাস্থ্য নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েন তানিয়া ও তাঁর তিন বন্ধু। গত বছরের ২ অক্টোবর তাই তাঁরা সিদ্ধান্ত নেন রাস্তার কুকুরদের দেখাশোনা, মূলত: চিকিৎসা করবেন। যেমন ভাবা তেমন কাজ। স্নাতক প্রথম বর্ষের এই চার বন্ধু নামলেন রাস্তার অলিগলিতে। প্রতিমাসেই এক একটি অঞ্চলে যান এবং কুকুরদের সাথে বেশ কিছুটা সময় কাটান। এমনকি পাঁচ বছরের বেশি বয়সের সব কুকুরদের প্রতি মাসের রক্তপরীক্ষার ব্যবস্থাও করে আসছেন। তবে একাজে স্থানীয়রা সাহায্য করেন নানানভাবে এমনটাই জানান তাঁরা। কোনো বাড়ির ফাঁকা গ্যারেজ কিংবা ফাঁকা কোনো চত্বর কুকুরগুলোকে একজোট করে চলে পরীক্ষা-নিরীক্ষা। মাসে এক থেকে দু’বার তাদের ভরপেট খাবারের জোগাড়ও করে এই গ্রপটি। অন্যদিকে সময় বিশেষে অনাথ ও বৃদ্ধাশ্রমের মানুষদের সঙ্গেও অনেকটা সময় কাটান তাঁরা।
চারজন থেকে শুরু করলেও এখন দল বড় হয়ে কুড়ি জন। তাঁরা সবটুকু করে চলছেন ওদের ভালোবেসেই। সমাজের চোখে তাই এক দৃষ্টান্ত হয়ে দাঁড়িয়েছে আজ এই ‘লিটল পজ গ্রুপ’।
Discussion about this post