‘ধর্ষণ’! শব্দটা শুনলেই এক ভয়ংকর অস্বস্তি এবং রাগে জেগে ওঠে শরীরের সমস্ত চেতনা। সাম্প্রতিককালে ঘটে যাওয়া ধর্ষণের ঘটনায় দেশ জুড়ে চলছে প্রতিবাদের ঝড়। সেই সঙ্গে তোলপাড় সোশ্যাল মিডিয়াও। ধর্ষকদের শাস্তি কামনায় যেমন পথে নেমেছেন হাজারও মানুষ, তেমনই সামাজিক মাধ্যমে মহিলাদের সুরক্ষার জন্য উঠেছে সুর। আর ঠিক তখনই আবারও মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে সমাজের কিছু নোংরা কীট! সোশ্যাল মিডিয়ায় উগড়ে দিচ্ছে ধর্ষণ সমর্থিত ক্রিয়া কৌশল। ঠিক কী ধরনের মানসিকতার পরিচয়ই বা দিচ্ছেন তারা?
ফেসবুকে সম্প্রতি একটি পোস্ট বেশ ভাইরাল। হঠাৎ কোনও তাৎক্ষণিক শ্লীলতাহানির প্রচেষ্টার প্রতিক্রিয়ায় একটি মহিলা কী কী করে নিজেকে বাঁচাতে পারেন, পোস্টটির মূল বক্তব্য ঠিক সেটাই। ফেসবুকে আসা মাত্রই মুহূর্তের মধ্যে বেশ জনপ্রিয়তাও পায় সেই পোস্ট। লাইক, কমেন্ট এবং শেয়ারেও সেটিকে ভরিয়েও তোলেন নেটিজেনরা। এই পর্যন্ত সব ঠিকঠাকই ছিল। এরপরই হঠাৎ ফেসবুকে সামনে এল এক বিরোধী পোস্ট। সেখানে লেখা কীভাবে একটি মেয়েকে জোর করে ধর্ষণ করা সম্ভব। হ্যাঁ, ঠিকই পড়েছেন! বিরোধী পোস্টটিতে ঠিক এটাই লেখা রয়েছে।
শুধু তাই নয়, কী কী ভাবে মেয়েটিকে আক্রমণ করে নির্ঝঞ্ঝাট ভাবে ধর্ষণ করা সম্ভব তার সম্পূর্ণ বিবরণও রয়েছে লেখাটিতে। শরাফ এস নওয়ার নামে এক যুবকের সোশ্যাল অ্যাকাউন্ট থেকে করা হয়েছে সেই পোস্ট। সেটি সামনে আসা মাত্রই স্বাভাবিক ভাবেই তীব্র ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন মানুষজন। যুবকটির মানসিক স্থিরতা এবং অত্যন্ত রুচিহীন মানসিকতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। নেটিজেনদের একাংশের মতে যে ব্যক্তির চিন্তাধারা এত নিম্নরুচির; তার কাছে নিজের বাড়ির বা প্রতিবেশী কোনও মহিলাই সুরক্ষিত নয়। তারা এও বলেন ঠিক এই ধরনের মানুষগুলির জন্য সমাজে ধর্ষণ বেড়ে চলেছে প্রতিনিয়ত। যার সমাধান সূত্র মেলেনি আজও।
এই ঘটনার পর স্বাভাবিকভাবে কয়েকটি প্রশ্নও কিন্তু উঠে আসছেই। এই ধরনের বিকৃত মানসিকতার মানুষগুলি আসলে সমাজের জঞ্জাল। এদের থেকেই জন্ম হয় এক-একটি ধর্ষকের। কিন্তু এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে কে? ধর্ষণ যেমন এক ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ সেরকমই ধর্ষণে প্ররোচিত করা বা মদত দেওয়া একই রকমের অপরাধ। এর জন্য উপযুক্ত কঠোর শাস্তির প্রয়োজন তো বটেই! কিন্তু ন্যায় কি আদৌ মিলবে? এই সমস্যার সমাধান কি আদৌ হওয়া সম্ভব? চারদিকে প্রশ্ন আর প্রশ্ন! এর উত্তর যে কবে মিলবে তা আজ কেই বা বলতে পারে…
Discussion about this post