বর্তমানে যেখানে গোটা দেশ বারংবার গর্জে উঠছে সবুজ প্রাণ সংরক্ষণ ও কন্যা ভ্রূণ হত্যা বন্ধের মতো বিষয় গুলি নিয়ে। সেখানে রাজস্থানের পিপলান্ত্রি গ্রামের মানুষগুলো, সারা বিশ্বের কাছে সবচেয়ে বড় উদাহরণ হয়ে দাঁড়ায় কন্যা সন্তান ও সবুজ সংরক্ষণের লক্ষ্য। বিগত বেশ কিছু বছর ধরে এই গ্রামের মানুষেরা কন্যা সন্তানদের আগলে রেখেছে সবুজের সমারোহে। সবুজকে আগলে কন্যা সন্তানকে উপযুক্ত করে গড়ে তোলাই লক্ষ্য তাদের।
এই গ্রামে কন্যা সন্তান জন্মালে গ্রামে লাগানো হয় ১১১ টি করে গাছ। শুধু তাই নয় কন্যা সন্তানের পিতা মাতার দেওয়া ১০ হাজার টাকা ও দান প্রাপ্ত অর্থের ৩১ হাজার টাকা নিয়ে পুরো টাকাটা ফিক্স ডিপোজিট করা হয় সেই কন্যা সন্তানের নামে। যাতে ১৮-২০ বছর পর সে যখন বড় হবে তখন তার বিয়ে অথবা পড়াশুনার কাজে সেই অর্থ যথাযথ ব্যবহার করা যায়। এছাড়াও যাতে কোনো কন্যা পড়াশুনায় কোনো ঘাটতি না হয় বা কম বয়সে যাতে কারোর বিয়ে হয়ে না যায় সেদিকেও নজর রাখেন তাদের বাবা-মা’রা।
এই অভিনব উদ্যোগের মূল উদ্দেশ্য কন্যা সন্তান সংরক্ষণ। প্রতিবছর এই গ্রামে প্রায় ৬০টি করে কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। প্রকৃতির কোলে রাজস্থানের শুকনো মাটিতে চারা রোপন করার মধ্যে দিয়ে বড় হয়ে ওঠে পিপলান্ত্রি গ্রামের মেয়েরাও। প্রতিবছর এই গাছগুলোকে ভাই মনে করে তাদের ডালে রাখিও বেঁধে দেয় গ্রামের মেয়েরা। সবচেয়ে আনন্দের বিষয় হলো রাজস্থানের মতো রুক্ষ-মরুর জায়গার এই গ্রামটিতে প্রাণ খুলে শ্বাস নিতে পারে মানুষ। অভাব হয়না খাবার জলেরও। আর এখানেই পিপলান্ত্রি রাজস্থানের অন্য সব গ্রামের থেকে আলাদা।
পরিশেষে একটাই কথা বলা যায়, নারী যে প্রকৃতিরই রূপ তাই যেন অক্ষরে অক্ষরে মিলে যায় এই গ্রামে। আর এখানেই সমাজ সচেতনতার লক্ষ্যে রাজস্থানের এই গ্রাম হয়ে উঠেছে ভারতবর্ষের সকল স্থানের মধ্যে অনন্যা।
Discussion about this post