‘গাছ লাগান, প্রাণ বাঁচান’, সেই কবে থেকেই চলে আসা এই স্লোগান তো সকলেরই খুব পরিচিত। জেনারেল নলেজের বইয়ের পাতায় গাছ লাগানোর সুফল, গাছ কাটার কুফল, পরিবেশ দূষণের ফলাফল এই সমস্তই আমাদের খুব চেনা। কিন্তু এই চেনা তো চলেছে বছরের পর বছর। পরিবেশের খুব কিছু উন্নতি কি হয়েছে? কিন্তু, উন্নতি হতে পারে। সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা বলেছেন, গাছ লাগালেই পৃথিবীর পরিবেশের বয়স কমে যেতে পারে পাক্কা একশো বছর!
বায়ুমণ্ডলের বয়স কমাতে রোপণ করতে হবে গাছ। একটা দুটো বা পঞ্চাশটা গাছ নয়, পুরো এক লক্ষ কোটি গাছ পুঁতে ফেলতে হবে। এই গাছেরাই ফিরিয়ে দেবে বায়ুমণ্ডলের ১০০ বছর আগেকার বাতাস। এমনটাই জানিয়েছে সুইজারল্যান্ডের জুরিখে সুইস ফেডেরাল ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজি। গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান জার্নাল ‘সায়েন্সে’। তারা বলেছেন কমপক্ষে এক লাখ কোটি গাছ লাগালে বাতাসে কমবে বিষ। না হলে যে হারে জলবায়ুর পরিবর্তন হচ্ছে, তাতে ফুলে-ফেঁপে ওঠা সমুদ্রের জলেই তলিয়ে যেতে হবে আমাদের।
উষ্ণায়নের জেরে বরফ গলছে অস্বাভাবিক দ্রুত হারে। আর বিশ্বজোড়া শিল্পায়নের দৌলতে বাতাস ভয়ংকরভাবে বিষিয়ে উঠছে কার্বন মনোক্সাইড, কার্বন ডাই-অক্সাইড, সালফার ডাই-অক্সাইডসহ নানা ধরনের গ্রিন হাউস গ্যাসে যা তাপমাত্রা বাড়িয়ে দিচ্ছে পৃথিবীর। গবেষকরা বলেছেন গাছ লাগাতে জমির অভাব হবে না। মানুষের সদিচ্ছা ও আন্তরিকতা থাকলেই খুব দ্রুত এত গাছ লাগানো সম্ভব হবে। পৃথিবীর স্থলভাগের শহর, গ্রাম ও চাষাবাদের জমি ছাড়া পড়ে রয়েছে ৯০ লাখ বর্গকিলোমিটার এলাকা।
গবেষণাটি থেকে জানা গেছে, যে ক্রমাগত প্রচুর পরিমাণে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনের ফলে, বায়ুমণ্ডলে প্রচুর পরিমাণ কার্বন জমা হয়েছে। এই কার্বনের ২৫ শতাংশই বায়ুমণ্ডল থেকে সরে যাবে যদি মানুষ দ্রুততার সঙ্গে এক লাখ কোটি গাছ লাগাতে পারে। এর ফলে বায়ুমণ্ডল হয়ে যাবে ঠিক ১০০ বছর আগেকার মতো। এমনটা হলে, ‘প্রচণ্ড দাবদাহে জনজীবন বিপর্যস্ত’- এই শিরোনাম খবরের কাগজের পাতায় আর দেখতে হবে না বলেই মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।
Discussion about this post