ভালোবাসার মানুষকে বিয়ে করতে চান? বাড়িতে মেনে নিচ্ছে না? কিংবা আর্থিক কারণে বিয়ে আটকে গেছে? এই সকল সমস্যার একটাই সমাধান। নাহ সমাধান সূত্রটা এতো সহজে বলা যাবে না। বলবো! যদি একটু ধৈর্য ধরে পুরোটা শোনেন! তাহলে একটা গল্পই বলি…
সাল ২০১১ কিছুতেই বিয়ে মানবে না মৌমিতা ও পীযুষের (নাম পরিবর্তিত) পরিবার। তাহলে উপায়? পালিয়ে বিয়ে? কিন্তু সেখানেও তো ভালোই খরচ। কিন্তু টাকা কোথায়? এমন ভাবতে ভাবতেই এই যুগল গিয়ে উপস্থিত হয় স্থানীয় এক যুবক শুধাঙ্কর ঘোষের কাছে টাকা ধার চাইতে। ব্যস আর কী! তাদের পরিত্রাতা হয়ে উঠলেন শুধাঙ্কর স্বয়ং। শুধু বিয়েই দিলেন তাই নয়, তার পরিবর্তে একটা টাকাও খরচ করতে দেননি এই যুগলকে। সেই ২০১১ থেকে শুরু করে ২০২০। মাঝখানে কেটে গেছে ৯টা বছর। আর গুটি গুটি পায়ে শুধাঙ্কর হয়ে উঠেছে বিয়ে সংক্রান্ত সকল সমস্যার একমাত্র সমাধানসূত্র। এতক্ষণে গল্পটা হয়তো খানিকটা আন্দাজ করেছেন। এই ন’বছরে শুধাঙ্কর মোট ৩৪টা যুগলের এভাবেই বিয়ে দিয়েছেন। আর এভাবে বিয়ে দিতে গিয়ে তাকে ঝক্কিও কিন্তু কম পোহাতে হয়নি। কখনো মেয়ের বাবার উপদ্রব তো কখনো পুলিশি ঝক্কি। শুধু তাই নয় আর্থিক সমস্যার কারণে বিয়ে আটকে যাওয়া যুগলকে শুধুমাত্র বিয়ে দেওয়াই নয়, নিজের সংস্থায় কাজও দিয়েছেন শুধাঙ্কর। আর এখানেই সিনেমার হিরোদের ছাপিয়ে শুধাঙ্কর হয়ে উঠেছেন রিয়েল লাইফ হিরো।
ডেইলি নিউজ রিল’কে বনগাঁর বাসিন্দা শুধাঙ্কর ঘোষ জানান, “অনেক ক্ষেত্রে এমন অবস্থাও হয় যে হঠাৎ বাড়ি থেকে পালিয়ে এসেছে। ফিরে যাওয়ার রাস্তাও বন্ধ। এমন পরিস্থিতিতে যদি তাদের পাশে না দাঁড়াই তাহলে তারা কোনো খারাপ পদক্ষেপ পর্যন্ত নিতে পারে। এমনকি এক যুগল আত্মহত্যাও পর্যন্ত করতে যায়। তাই আমি সবসময় চেষ্টা করি তাদের পাশে দাঁড়াতে।” ডেইলি নিউজ রিলের তরফে প্রশ্ন করা হয়, “আগামী দিনে এরকম সমস্যায় পড়া যুগলদেরকে আপনি ঠিক কি বলতে চান?” শুধাঙ্করের সহজ উত্তর, “বিয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রথমতঃ কিছু ডকুমেন্টস্ দেখি যে তাদের ১৮ বছর হয়ে গেছে কিনা। যদি বাড়ি দূরেও হয় সেক্ষেত্রেও আমি নিজের গাড়ি করে তাদের নিয়ে আসার ব্যবস্থা করি। আর বিয়ে আমি সম্পূর্ণ ভাবে নিজের খরচেই দিয়ে থাকি। সাধারণতঃ মন্দিরেই বিয়ে দিই। আবার একটা বিয়ের ক্ষেত্রে তাদের একান্ত অনুরোধে আমার নিজের বাড়িতে অনুষ্ঠানও করেছিলাম। বিয়ের পরবর্তীতে আর্থিক সমস্যা হলে আমি আমার কোম্পানিতে চাকরিও দেব।”
অতীতে যাদের বিয়ে তিনি দিয়েছেন, বর্তমানে অন্যান্য বিয়ে দেবার ক্ষেত্রে তাঁরা অনেকেই শুধাঙ্করকে সাহায্য করছেন। এই লকডাউনেও সম্প্রতি তিনি ২ টো বিয়ে দিয়েছেন। এমনকি তিনি যে ৩৪ টি যুগলের বিয়ে দিয়েছেন তারা প্রত্যেকেই এখনও সুখে সংসারও করছে। আর এমন মহৎ কাজে তার পরিবারও সবসময় শুধাঙ্করের পাশে থাকে। এবার নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন কেন বলেছিলাম একটু ধৈর্য ধরে পুরোটা পড়তে হবে। ব্যস তাহলে আর দেরি কেন? হাতের কাছে তো মুশকিল আসান রয়েছেই। বিপদে পড়ে পালিয়ে বিয়ে করার প্ল্যান থাকলে সত্ত্বর যোগাযোগ করতে পারেন এই লাভ গুরুকে।
Discussion about this post