দফায় দফায় শিক্ষা ব্যবস্থার বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সামিল হচ্ছে ছাত্র ছাত্রীরা। উগড়ে দিচ্ছে ক্ষোভ। কিছুদিন আগেই প্রতিবাদ জানায় নার্সিং এর ছাত্রীরা যার রেশ এখনো অব্যাহত। অপরদিকে সেই একই অভিযোগ এবার উঠল ওয়েস্ট বেঙ্গল ইউনিভার্সিটি অফ হেলথ সায়েন্সর ফিজিওথেরাপির ছাত্র-ছাত্রীদের তরফেও। সূত্রের খবর, মঙ্গলবার মধ্য রাতে ফিজিও থেরাপির প্রথম বর্ষের পরীক্ষার রুটিন দিয়ে জানানো হয়েছে আগামী ১৬ জুলাই থেকে পরীক্ষা শুরু হবে। এর পরেই প্রতিবাদে সামিল হয় শিক্ষার্থীরা। উঠে আসে কলেজ ইউনিভার্সিটির বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ। শিক্ষার্থীদের একাংশ যোগাযোগ করে ডেইলি নিউজ রিলের সঙ্গে। চলুন একে একে শুনে নেওয়া যাক পরীক্ষার্থীরা ঠিক কী কী বলছেন?
ওয়েস্ট বেঙ্গল ইউনিভার্সিটি অফ হেলথ সাইন্সের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র শৈবাল মৈত্রর (নাম পরিবর্তিত) বক্তব্য, “যেখানে সমস্ত ইউনিভার্সিটি তাদের পরীক্ষা বাতিল করেছে, এমনকি ফাইনাল ইয়ারের পরীক্ষাও যেখানে বাতিল করা হয়েছে সেখানে আমাদের ইউনিভার্সিটি কোন কথাই শুনতে চাইছে না। এখানে মিজোরাম, আন্দামান, মুম্বাই, দিল্লি, বিহার সহ বিভিন্ন জায়গা থেকে ছাত্রছাত্রীরা পড়তে আসেন। লকডাউনের ফলে তারা সবাই বাড়ি ফিরে গিয়েছে। এখন এরকম পরিস্থিতিতে পরীক্ষা হলে তারা এসে পৌঁছাবে কী করে? আর এলেও তারা থাকবে কোথায়? কারণ এই মুহূর্তে কেউ বাড়ি ভাড়া দেবে না।” শৈবাল আরও জানায়,”কলেজকে পুরো বিষয়টি জানিয়েও কোনো লাভ হয়নি। এর পরবর্তীতে ইউনিভার্সিটির অধ্যক্ষকে মেইল করা হয়েছে। অন্যদিকে রাজ্যপালের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও এখনো পর্যন্ত কোনও সদুত্তর পাওয়া যায়নি।”
এদিকে সেই একই অভিযোগ তুললেন ইউনিভার্সিটির দ্বিতীয় বর্ষের এক ছাত্রী সোহিনী মুখার্জীও (নাম পরিবর্তিত)। তিনি অকপটে জানালেন,” আমার বাড়ি আলিপুর দুয়ারে। এরকম পরিস্থিতিতে আলিপুরদুয়ার থেকে কলকাতা যেতে গেলে গাড়ি ভাড়া ৩০ হাজার টাকা চাইছে। এখান থেকে এতো টাকা খরচা করে কলকাতায় যাওয়া বা আবার ফেরত আসা আমার পক্ষে কোনভাবেই সম্ভব নয়। যে পিজিতে আমি থাকতাম সেখানেও বলে দিয়েছে এরকম পরিস্থিতিতে পিজিতে থাকতে দেওয়া হবে না। একরকম উভয় সঙ্কটের মধ্যে আমরা দাঁড়িয়ে। ইতিমধ্যেই ইউজিসি পরীক্ষা বাতিলের নির্দেশ দেওয়া সত্ত্বেও আমাদের ইউনিভার্সিটি পরীক্ষা বাতিল করছে না। পরীক্ষা বাতিল করার পরিবর্তে বরং উল্টে প্রথম বর্ষের পরীক্ষার রুটিন দিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং এও বলা হয়েছে প্রথম বর্ষের পরীক্ষা শেষ হলেই দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষা শুরু হবে।”
ওয়েস্ট বেঙ্গল ইউনিভার্সিটি অফ হেলথ সায়েন্সের অপর এক ছাত্র শুভদীপ দাস (নাম পরিবর্তিত) ডেইলি নিউজ রিলকে জানায়,”আমাদের (দ্বিতীয় বর্ষের) থিওরি পরীক্ষা আগেই হয়ে গেছে বাকি আছে শুধু প্র্যাকটিক্যাল। সেক্ষেত্রে থিওরির নাম্বারের ভিত্তিতে ও অ্যাসাইনমেন্টের ভিত্তিতে নম্বর দিয়ে পাশ করিয়ে পরবর্তী বর্ষে উত্তীর্ণ করে দেওয়া হোক এটাই আমরা চাই।”
সমাধান সূত্র নিয়ে এখনো পর্যন্ত মুখ খোলেনি ওয়েস্ট বেঙ্গল ইউনিভার্সিটি অফ হেলথ সায়েন্স। এদিকে সরকারের নির্দেশ মোতাবেক ভিন রাজ্য থেকে এলে যে কোন ব্যক্তিকে প্রথমেই থাকতে হবে ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টাইনে। সে ক্ষেত্রে ১৬ জুলাই পরীক্ষা হলে সম্পূর্ণ বিষয়টি ঠিক কীভাবে সম্ভব তা ভেবে শঙ্কায় দিন কাটছে শিক্ষার্থীদের। অভিযোগ বারবার মেইল করা সত্বেও মুখে কুলুপ এঁটেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এখনও মেলেনি উত্তর।
Discussion about this post