প্রথম এবং দ্বিতীয় বর্ষের অকৃতকার্য পরীক্ষার্থীদের ফের পরীক্ষা হওয়ার পর পেরিয়ে গেছে প্রায় ৭ মাস। তারপরও প্রকাশ হয়নি ফলাফল। এমনকি তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষা কীভাবে হবে তা নিয়েও আশঙ্কায় প্রত্যেকেই। পরীক্ষা নিয়ে জারি হয়নি কোনও নোটিশও। এইসব দাবী-দাওয়া পূরণ করতেই অনলাইনে বিক্ষোভে নামল বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুণ ছাত্র-ছাত্রীদের দল। করোনা ও লকডাউনের কারণে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজবাটি ক্যাম্পাসে যাওয়া সম্ভব হয়নি। তাই বাড়িতে বসেই অনলাইনে গণ-ইমেলের মাধ্যমে নিজেদের দাবী জানাল পুরোনো পাঠ্যক্রমের তৃতীয় বর্ষের পড়ুয়ারা। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য্যের কাছে করা এই ই-মেলের মাধ্যমে নিজেদের দাবী পূরণের আবেদন রাখেন তারা।
অনলাইনে মেল করে জানানো দাবী কি আদৌ পূরণ হবে? তা নিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের মনে সন্দেহ ছিল যথেষ্টই। তবুও এক বুক ভরসা নিয়েই পথে নেমে পড়েছিল তারা। যে দাবী তারা জানিয়েছে সেগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল – ১) পুরোনো পাঠ্যক্রমের প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের ফল দ্রুত বের করতে হবে, ২) ফলাফল বের করার পর দ্রুত রিভিউ ও স্ক্রুটনি প্রক্রিয়া সম্পূর্ন করতে হবে, ৩) করোনা পরিস্থিতির জন্য হলে গিয়ে পরীক্ষা দেওয়া সম্ভব নয়। আবার অনলাইনে পরীক্ষা দেওয়ার মতো পরিকাঠামোই অধিকাংশ ছাত্রছাত্রীদের কাছে হাজির নেই। এই সমস্যার কথা মাথায় রেখে ফাইনাল পরীক্ষা নিয়ে দ্রুত বিবৃতি প্রকাশ করতে হবে এবং ৪) প্রত্যেক ছাত্রছাত্রীর এ বছরের সেমিস্টার ফি এবং পরীক্ষার ফর্ম ফিল-আপের ফি মুকুব করতে হবে। ছাত্রদের ক্রমাগত গণ-ইমেলের চাপে শেষ পর্যন্ত নতিস্বীকার করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ই-মেল শুরুর প্রায় এক সপ্তাহের মধ্যেই ২৪ জুন পুরোনো পাঠক্রমের প্রথম বর্ষের পরীক্ষার ফলাফল বের করে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়।
যদিও ফলাফল ঘোষণার পরও ক্ষুব্ধ প্রায় ২৫০০ ছাত্রছাত্রী। অস্বচ্ছতার সঙ্গে নাকি খাতা দেখা হয়েছে, এমনটাই তাদের দাবী। হাতে মার্কশিট পাওয়ার পরই তারা পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবেন বলেও জানান। এমনকি সমস্ত দাবী যে এখনও পূরণ হয়নি তাও জানিয়েছেন সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা। তাদের কথায়, বাকি দাবী পূরণ না হওয়া পর্যন্ত জারি থাকবে এই আন্দোলন। তবে আন্দোলনের এই ফলাফলকে আংশিক জয় হিসেবেই দেখতে চাইছেন তারা। ২০১৫ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘হোক প্রতিবাদ’ দিয়ে শুরু হয়েছিল সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের এক ঐতিহাসিক স্বাধীন আন্দোলন। সেই রাস্তায় যে আরও একটি নতুন মাইল ফলক যোগ করল নতুন এই আন্দোলন, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
Discussion about this post