উৎসবের আমেজে আবারও বাঙালি মেতে ওঠার তালে। কালীপুজো অর্থাৎ দীপাবলি আসন্ন। এ থেকে বাদ যায় না কিছু প্রাচীন কালীপুজোও। তেমনই এক পুজো বাঁকুড়া জেলার মাধবডিহি থানার উচালন গ্রামের কালীপুজো। এ পুজো আসলে ছিল মুখোপাধ্যায় বাড়ির পুজো। তবে তাতে গোটা অঞ্চল সামিল হয় আনন্দের সাথে। সেই থেকেই পুজোটি হয়ে উঠেছে সকলের।
মুখোপাধ্যায় পরিবারের এ পুজোর বয়স প্রায় ৫০০ বছর। অন্তত এমনটাই দাবি মুখোপাধ্যায়ের পরিবারের। এ বাড়িতে পুজো পান মা দক্ষিণাকালী। উচালন গ্রামের নানা ইতিহাস রয়েছে। শোনা যায়, মা সারদা একবার কামারপুকুর ফেরার পথে শিষ্যদের অনুরোধে এ গ্রামে রাত্রিবাস করেছিলেন। ‘সারদা কথা’ বইতে এ ঘটনার উল্লেখ পাওয়া যায়। অন্যদিকে এ গ্রামের রাজা ছিলেন উচ্ছল, তা থেকে গ্রামের নাম ছিল উচ্ছালন। ক্রমে তা মানুষের উচ্চারণে উচালন হয়ে উঠেছে।
সে যাইহোক, গ্রামের পুজো ঘিরে কিন্তু উৎসবের মেজাজ তুঙ্গে থাকে প্রতি বছরই। অমাবস্যায় গোটা রাত ধরে পুজো চলে। তবে পুজোর অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো প্রসাদ বিতরণ। পুজোর পরের দিন সকাল থেকে গোটা গ্রামের মানুষ ভিড় করে আসে মণ্ডপে। প্রত্যেক গ্রামবাসী ভোগের জন্য কোনো না কোনো সব্জি নিয়ে আসেন। কেউ আবার নিয়ে আসেন চাল। এ বাড়ির দ্বার সকলের জন্য খোলা থাকে।
পুজোর উদ্বোধন করতে আসেন বিভিন্ন অতিথি। বিশেষ করে এলাকার থানার পুলিশ সুপার। পুজোতে সুরক্ষা প্রদান তো আছেই, সঙ্গে রয়েছে অন্যরকম আনন্দ। দুঃস্থ মানুষদের হাতে কিছু সাহায্য তুলে দেওয়া। গোটা বছর ব্যস্ততার পর ব্যতিক্রমী এই আনন্দের স্বাদ নিতে তারা সব সময়ে প্রস্তুত।
Discussion about this post