কথায় বলে, আমাদের কলকাতা নাকি স্বার্থপরতার শহর! কিন্তু একজন আছেন যিনি আমাদের তিলোত্তমার এই বদনামকে ঘুচিয়ে চলেছেন প্রতিনিয়ত তার নিঃস্বার্থ অবদানের মাধ্যমে। হ্যাঁ, তিনি আর কেউ নন, শহর কলকাতা যাকে ডাকেন ‘হসপিটাল ম্যান’ নামে। আমাদের সবার প্রিয় পার্থ কর চৌধুরী। আজ প্রায় ছ’বছরেরও বেশি সময় ধরে হাসপাতালের বাইরে অপেক্ষারত রোগী ও তাদের আত্মীয়দের মুখে বিনামূল্যে খাবার তুলে দিচ্ছেন পেশায় পুলকার চালক পার্থ কর চৌধুরী। এবার তিনি মানবিকতার অনন্য এক নজির গড়ে তুলেছেন দোল উৎসবে ক্যান্সার রোগীদের সামিল করে।
হাজরার চিত্তরঞ্জন ক্যান্সার হাসপাতালের ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীদের এবং তাদের আত্মীয় স্বজনদের সঙ্গে নিয়ে রঙের উৎসব পালন করলেন তিনি। শুধু ফুল এবং একেবারে ভেষজ উপায়ে তৈরী আবিরের সঙ্গে দেদার মজা করে উদযাপিত হল এবছরের রঙের উৎসব। শুধু তাই নয়, রোজ খাদ্যহীনদের মুখে খাবার তুলে দেওয়ার মতো দোলের দিনেও ভাত-মাছের সঙ্গে তাদের খাদ্য সংস্থান করেছেন ওই দিনেও। তার কথায়, হাসপাতালে যে সব মানুষদের গায়ে রংয়ের আঁচটুকুও লাগে না এ বছর তাদের এই আনন্দ উৎসবে সামিল করতে পেরে তিনি সত্যিই অভিভূত। তিনি ফুল, আবির, মিষ্টি এসব কিছুর জোগান দিলেও রোগীরা নিজেরাই সামলেছেন এই উদ্যোগ। সাজানো থেকে শুরু করে বড়দের পায়ে আবির দেওয়া সবকিছুই তাঁরা করেছেন খুব যত্ন করে।
শুধু দোল উৎসব নয়, এর আগেও দুর্গাপুজো, বড়দিন এরকম বিশেষ দিনগুলিতে তিনি রোগীদের পাশে থেকে তাদের আনন্দ দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। তবে এবছর দোল উৎসবে যারা বাড়ি থেকে দিনের পর দিন পড়ে রয়েছেন চিকিৎসার স্বার্থে, তাদের নিখাদ আনন্দ দিতেই বিশেষ এই আয়োজন। তার বক্তব্য, এরকমভাবেই পয়লা বৈশাখ ও তার জন্মদিনেও তিনি একটি রক্তদান শিবিরের আয়োজন করার চেষ্টায় রয়েছেন শুধুমাত্র রোগীদের স্বার্থে। তার কথায়, “হাসপাতালে আক্রান্ত রোগীদের পাশে যতটুকু দাঁড়ানো যায় প্রতিনিয়ত সেই চেষ্টাই করে চলেছি।” একক কৃতিত্বে নিজের সবটুকু উজাড় করে ‘জীবে প্রেম’ করার এই উদ্যোগ সত্যিই এক বিরল দৃষ্টান্ত।
Discussion about this post