স্বাধীনতা দিবসের দিনটি সাক্ষী থাকল অভিনব প্রতিবাদের। সামাজিক মাধ্যমে নিজের প্রোফাইল ফটো কালো করে অনন্য কায়দায় প্রতিবাদ জানালেন প্রায় দুশো’র বেশি পুরুষ অধিকার কর্মী। কিন্তু কেন এরকম পদক্ষেপ? প্রতিবাদকারীদের দাবি, বর্তমানে পুরুষদের হাতে কোনো আইন-কানুন তো দূরের কথা। বরং পুরুষদের নিজেদের দুঃখে কাঁদার পর্যন্ত অধিকার নেই। এক পুরুষ অধিকার কর্মীর বক্তব্য, “বর্তমানে ভারতবর্ষ স্বাধীন হয়েছে ঠিকই কিন্তু পুরুষরা কোন স্বাধীনতা পায়নি। কারণ হিসেবে অবশ্যই দায়ী ৪৮ খানা আইন যা সম্পূর্ণ রূপে পুরুষ বিরোধী। এমনকি পুরুষদের অভিযোগ জানানোর জন্য নেই কোনো পুরুষ কমিশন। অথচ যে ভারতবর্ষ স্বাধীন করার ক্ষেত্রে ভূমিকা ছিল বিপ্লবী বাঘা যতীন, বিপ্লবী ক্ষুদিরাম ও প্রফুল্ল চাকী, বিপ্লবী মাস্টারদা সূর্যসেন, বিপ্লবী উল্লাসকর দত্ত, বিপ্লবী রাসবিহারী বসু এবং নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর মত পুরুষদের আত্মত্যাগ।
তিনি এও বলেন, দেশের পুরুষ সৈনিকেরা দেশের সীমান্তে বহিঃশত্রুর আক্রমণ থেকে দেশকে রক্ষা করতে গিয়ে প্রাণ হারাচ্ছেন। অথচ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেখা যায় বর্তমানে কিছু নারী শুধুমাত্র আইনের সুযোগ দিয়ে সেই সমস্ত সেনাবাহিনীকে যে কোনো সময় রাস্তাঘাটে শারীরিকভাবে হেনস্তা করছে অথচ সেনাবাহিনীর হাতে বন্দুক থাকা সত্ত্বেও সেনাবাহিনী কোনো প্রতিবাদ করতে পারছে না শুধুমাত্র আইন লিঙ্গ বৈষম্যমূলক হওয়ার জন্য।” তাই সেই পুরুষ অধিকার কর্মীর ভাষায় যতদিন ভারতে পুরুষদের জন্য পুরুষ কমিশন গঠিত না হবে ততদিন ওনার কাছে “ইয়ে আজাদি ঝুটা হ্যায়”।
পুরুষ অধিকার কর্মী এক আইনজীবীর বক্তব্য, “স্বাধীন ভারতের পুরুষরা স্বাধীন নয় নারীকেন্দ্রিক আইনের জন্য। তাই আমাদের দাবি সমাজতন্ত্র ও লিঙ্গনিরপেক্ষ আইন।” এই কারণেই গত ১৫ আগস্ট প্রায় ২০০ পুরুষ অধিকার কর্মী নিজের ফেসবুক প্রোফাইল ফটো কালো করে ভারতবর্ষের লিঙ্গবৈষম্যমূলক আইনের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন। দেশের রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করেছিলেন, “ভারতের নারীরাই হলো দেশের ভবিষ্যৎ।” সমস্ত পুরুষ অধিকার কর্মীদের দাবি একটাই। যদি দেশে কোনোভাবে লিঙ্গ-নিরপেক্ষ আইন এবং পুরুষ কমিশন স্থাপিত না হয় তাহলে সমস্ত পুরুষ অধিকার কর্মীরা ভবিষ্যতে ঐক্যবদ্ধ হয়ে গণ-আন্দোলনে নামবে।
Discussion about this post