‘হাসতে হাসতে পেটে খিল’ এ কথা তো শোনাই যায়। তবে হাসতে হাসতে বুকে ব্যথা শুনেছেন কখনো? হাসতে গিয়েও আজকাল দেখা দিচ্ছে আতঙ্ক। প্রেমে পড়ে মুচকি হাসির জন্য অবশ্য এ খবর নয়। কথা হচ্ছে ‘কলরোফোবিয়া’ নিয়ে। ‘কলরো’ অর্থাৎ ক্লাউন।এ ভয় জোকারদের থেকে। শুনতে অবিশ্বাস্য হলেও এ ঘটনা এখন আর নতুন কিছু নয়।
সময়ের স্রোতে সার্কাস ফুরিয়ে এলেও, ক্লাউনদের দিন ফুরোতে ঢের দেরি। ক্লাউন বা জোকার সম্পর্কে সবাই অবগত। মুখে রঙ মেখে মানুষকে হাসানোই তাদের কাজ। তবে এই হাসির কারণটাই যদি কারোর শরীর খারাপের কারণ হয়ে দাঁড়ায়? হঠাৎ যদি শুরু হয় বুকে ব্যথা? এমন আশ্চর্যজনক ঘটনা বেশ কিছু বছর ধরেই ঘটে চলেছে গোটা পৃথিবী জুড়ে। কলরোফোবিয়া নামটা জনপ্রিয় ঠিকই। তবে ডায়াগোন্যাস্টিকাল অ্যান্ড স্ট্যাটিসটিকাল ম্যানুয়াল অফ মেন্টাল ডিস-অর্ডারে এর কোনো উল্লেখ নেই। এ রোগে উদ্বেগ শুধুমাত্র মুখোশ পরা রঙ মাখা মুখ দেখেই। দ্রুত রক্ত সঞ্চালনকে সাথী করে হতে পারে হার্ট অ্যাটাকও।
অনেক মনোবিজ্ঞানী এই ব্যখ্যা মানতে নারাজ। তাদের মতে, মানুষ ভয়ের কারণ না জানা অবধি কেউ ভয় পেতে পারে না। আসলে ক্লাউনদের নিয়ে তৈরি কিছু গল্প বা সিনেমা আমাদের মনে তৈরি করে দিচ্ছে ভয়ের জায়গা। যেমনি ধরুন ব্যাটম্যান সিরিজ। সেখানকার জোকার চরিত্রটি বেশ ভয় পাইয়ে দিতে পারে। আর হলিউডের মুভি আইটি বা ইট তার কথা বলাই বাহুল্য। শুধু মুভিটাই নয় স্টিফেন কিং এর উপন্যাসটিও পারে আতঙ্ক ছড়িয়ে দিতে। তাছাড়া আমেরিকার একজন সিরিয়াল কিলার, যে কিনা জোকার সেজে খুন করে বেড়াতো। তাঁকে নিয়েও তৈরি হয়েছে একাধিক মুভি। এসবই একদিক থেকে কলরোফোবিয়ার জন্য দায়ী।
মুখোশধারী মানুষের চেয়ে এদের চেনা অনেক সহজ। শৈশব জুড়ে থাকা জোকাররা তলিয়ে যাচ্ছে অন্ধকারে। তলিয়ে যাচ্ছে তাদের রূপ। যে রূপ মানুষের এই নতুন রোগের জন্ম দিচ্ছে। সময়ের সাথে এর প্রতিকার কি উপায়ে হতে পারে এখন সেটাই দেখার! ভয়কে জয় করে হাসি থাকুক সুস্থতার সঙ্গী হয়ে।
Discussion about this post