পৃথিবীর গভীরতম পাইলের সেতু পদ্মা আগামী মাসে চালু হলে সড়ক পথে কলকাতা থেকে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা সড়ক পথে সর্বোচ্চ ৬ ঘন্টা। পদ্মা সেতুর পাইল বা মাটির গভীরে বসানো ভিত্তি এখন পর্যন্ত বিশ্বে গভীরতম। সর্বোচ্চ ১২২ মিটার গভীর পর্যন্ত গেছে এই সেতুর অবকাঠামো। পদ্মা সেতুর বিশেষত্ব হলো, এটি দ্বিতল। নিচের অংশে ছুটবে ট্রেন, ওপর দিয়ে চলবে গাড়ি। পদ্মা নদীর জল থেকে প্রায় ১৮ মিটার উঁচু পদ্মা সেতুর তলা।জলের উচ্চতা যতই বাড়ুক না কেন, এর নিচ দিয়ে পাঁচতলার সমান উচ্চতার যেকোনো নৌযান সহজেই চলাচল করতে পারবে। পদ্মা সেতুর নদীতে থাকা ৪০টি পিলারের নিচের পাইল ইস্পাতের। আর ডাঙার দুটি পিলারের পাইল কংক্রিটের।
পদ্মা সেতুর আরেকটি বিশ্বরেকর্ড হচ্ছে এই সেতুতে ‘ফ্রিকশন পেন্ডুলাম বিয়ারিংয়ের’ সক্ষমতা হচ্ছে ১০ হাজার টন। এখন পর্যন্ত পৃথিবীর কোনো সেতুতে এমন সক্ষমতার বিয়ারিং লাগানো হয়নি। রিখটার স্কেলে ৯ মাত্রার ভূমিকম্পে টিকে থাকার সক্ষমতা আছে। পদ্মা সেতুর পাইলে ১ লাখ ৪৬ হাজার মেট্রিক টন স্টিল ব্যবহার করা হয়েছে। সবমোর্ট ২৬৬ পাইল । আর পদ্মা সেতুর ৪১টি স্প্যানের ওজন ১ লাখ ১৬ হাজার ৩৮৮ মেট্রিক টন। প্রতিটি স্প্যানের সর্বোচ্চ ওজন ৩০ হাজার ৮৮ মে. টন। ৬.১৫ কিলোমিটার মূল পদ্মা সেতুর সাথে ৩.৬৮ কিলোমিটার সংযোগ সেতুসহ পদ্মা সেতু হচ্ছে ৯.৮৩ কিলোমিটার। সেতুতে সাধারণ আলোর ব্যবস্থা ছাড়াও আর্কিটেকচার লাইটিংও আছে। বিশেষ বিশেষ দিবসগুলোতে এবং বিশেষ সময়ে লাইটিংয়ের মাধ্যমে আলোকসজ্জার মাধ্যমে সৌন্দর্য বাড়ানো হবে।
বর্তমানে মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেনে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা থেকে সরাসরি কলকাতায় যাওয়া যায়। কলকাতা স্টেশন থেকে নদীয়া হয়ে গেদে এবং গেদে হয়ে বাংলাদেশের সীমান্ত স্টেশন দর্শনা পার হয়ে ঢাকায় অবস্থিত ক্যান্টনমেন্ট স্টেশনে পৌঁছয় মৈত্রী এক্সপ্রেস। এ রুটে প্রায় ৪০০ কিলোমিটার রেলপথ পাড়ি দিতে হয় যাতে সময় লাগে প্রায় দশ ঘণ্টা। তবে পদ্মা সেতুর রেল লাইন এর কাজ সম্পন্ন হলে তখন কলকাতা স্টেশন থেকে বনগাঁ জংশন হয়ে হরিদাসপুর সীমান্ত দিয়ে বেনাপোল হয়ে যশোর, নড়াইল, ফরিদপুরের ভাঙ্গা হয়ে ঢাকা পৌঁছাতে পারবে ট্রেনটি। এ রুটের দূরত্ব দাঁড়াবে প্রায় ২৫১ কিলোমিটার। যা পার করতে মৈত্রী এক্সপ্রেসের গতিতে সাড়ে তিন ঘণ্টার বেশি সময় লাগার কথা নয়।
তবে আগামী মাসে চালু হচ্ছে সড়ক পদ্মা সেতুর সড়ক পথ,রেলপথের জন্য আরও কিছু দিন অপেক্ষার করতে হবে। পদ্মা সেতুর সাথেই নির্মিত হয়েছে ব্রীজ মিউজিয়াম। সেতুতে যে সকল উপকরণ, বেয়ারিং, গার্ডারসহ যেসব কিছু ব্যবহার হয়েছে পার্টে পার্টে এর নমুনা থাকছে এই জাদুঘরে। পদ্মা সেতুর একপ্রান্তে বাংলাদেশের বিক্রমপুর অন্যপ্রান্তে বৃহত্তর ফরিদপুরের শরীয়তপুর জেলার জাজিরা।
Discussion about this post